নোয়াখালীতে আট বছরের শিশু সন্তানকে বেঁধে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীর মাথার চুল কেটে শরীরে ছ্যাকা দেওয়া এবং তার ওপর বারবার সন্ত্রাসী নিয়ে হামলার অভিযোগে স্বামী মোশাররফ হোসেন উজ্জলকে (৩৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো: আলমগীর হোসেন জানান: মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে সোমবার থেকে উজ্জলকে ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযানে নামে পুলিশ। সে যাতে দেশের বাইরে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে তার পাসপোর্টের ছায়া কপি ও ছবি পাঠানো হয়।
গত বুধবার রাতে প্রবাস ফেরত স্বামী বেগমগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে মোশাররফ হোসেন উজ্জল (৩৫) জেলা শহরের বছিরার দোকান এলাকায় ভাড়া বাসায় যৌতুকের জন্য স্ত্রীর (২৪) মাথার চুল কেটে দেয়। এরপর তার পুরো শরীরে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। এসময় আট বছরের শিশু সন্তানকে বেঁধে রাখে। এক পর্যায়ে পালিয়ে পিতার বাড়িতে উঠেন স্ত্রী। সেখান থেকে তাকে চিকিৎসার জন্য কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানেও সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা চালায় উজ্জল। একপর্যায়ে সোমবার বিকেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার সময় আবারও ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে উজ্জল। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের চিকিৎসক নাসির উদ্দিন জানান: আহত কলির সারা শরীরে গরম লোহা দিয়ে ছ্যাকার চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
খবর পেয়ে রাতে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) দীপক জ্যোতি খীসা এবং সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো: আবদুর রহীম কলিকে দেখতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে যান। এসময় তারা এ ঘটনাকে বর্বর হামলা উল্লেখ করে অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন।
এমন প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার দুপুরে নির্যাতনের শিকার কলির বাবা বাদী হয়ে সুধারাম থানায় মামলা দায়ের করেন। সুধারাম থানার ওসি নবির হোসেন জানান: মামলায় মোশাররফ হোসেন উজ্জলকে একমাত্র আসামী করা হয়েছে।