মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই-এ অভিযোগ করে সোমবার বেলা ১১টায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠক শুরুর ৭ মিনিটের মাথায় ভিন্নমত পোষণ (নোট অব ডিসেন্ট) করে বৈঠক বর্জন করেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
বৈঠক বর্জনের সময় মাহবুব তালুকদারের দেয়া আপত্তিপত্রের প্রধান অংশটুকু এরকম:
(১) বিগত ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ তারিখে আমি ‘একাদশ জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ অংশীদারমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে কতিপয় প্রস্তাবনা’ শিরােনামে আমার বক্তব্য অদ্যকার নির্বাচন কমিশন সভায় উপস্থাপনা করার জন্য মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর একটি ইউ ও নােট পাঠাই। পরবর্তীতে এই একটি সংশােধনীও প্রেরণ করা হয়। বিগত ৮ অক্টোবর, ২০১৮ তারিখে কমিশন সচিবালয় থেকে ইউ ও নোটের মাধ্যমে আমাকে জানানাে হয়, আমার প্রস্তাবনাগুলি ১৫ অক্টোবর, ২০১৮ তারিখে ৩৬তম কমিশন সভায় উত্থাপন করার জনা মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমাকে অনুবােধ জানিয়েছেন।
(২) উল্লেখ্য যে, গত ৩১ জুলাই, ২০১৭ থেকে ২৪ অক্টোবর, ২০১৭ পর্যন্ত প্রায় ৩ মাস ব্যাপী নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করে। এতে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অংশীজন ছাফাও ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। সবার সংলাপ একত্রিত করে তা গ্রন্থাকারে প্রকাশ করা হয়। তবে উক্ত সংলাপের বিষয়ে আজ পর্যন্ত কমিশন সভায় কোনাে আলোচনা না হওয়ায় এবং সংলাপের কোনাে কার্যকারিতা পরিলক্ষিত না হওয়ায় বাক্তিগতভাবে আমি এটি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি এবং অংশীজনের সংলাপের আলােকে উপরােক্ত শিরােনামে প্রস্তাবনাসমূহ লিপিবদ্ধ করে কমিশন সভায় পেশ করার নিমিত্ত কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অনুরােধ জানাই।
(৩) আমার প্রস্তুাবনাসমূহ খাতে কমিশন সভায় উপস্থাপনা করতে না দেয়া হয়, এজন্য ৩ জন মাননীয় নির্বাচন কমিশনার এক ও অভিন্ন চিঠি লিখে পৃথক পৃথক ইউ ও নােটের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে অনুরােধ জানান। মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনায় তাদের সঙ্গে একমত হওয়ায় আমাকে প্রস্তাবনাসমূহ উপস্থাপন করতে দেয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশন সভায় আমার বক্তব্য উপস্থাপন করতে না দেয়ায় তাদের অভিন্ন অবস্থান আমাকে বিস্মিত ও মর্মাহত করেছে।
(৪) বাক প্রকাশের স্বাধীনতা ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধান প্রদত্ত আমার মৌলিক অধিকার। নির্বাচন কমিশন কোনােভাবেই আমার এই অধিকার খর্ব করতে পারে না। এমতাবস্থায় অনন্যোপায় হয়ে আমি নির্বাচন কমিশনের এরূপ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ‘নােট অব ডিসেন্ট’ প্রদান করছি এবং এর প্রতিবাদস্বরূপ নির্বাচন কমিশন সভা বর্জন করছি।