তার দাপট এমনই ছিল, যার কথায় এক সময় নেত্রকোনার কোনায় কোনায় যেন বাঘে-মহিষে এক ঘাটে পানি খেত। সেই তিনি কোনো গল্পের চরিত্র নয়; বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। যিনি সেখানে কায়েম করেছিলেন ভয়ংকর এক ত্রাসের রাজত্ব।
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় অন্য ১৮ জনের সাথে তারও মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
হাওর অধ্যুষিত মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী উপজেলা নিয়ে গঠিত নেত্রকোনা-৪ আসন। ২০০১ সালে ওই আসন থেকে বিএনপির টিকিটে নির্বাচিত হন ক্যাসিও বাবর নামে সুপরিচিত লুৎফুজ্জামান বাবর। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় পান অতিগুরুত্বপূর্ণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। প্রতিমন্ত্রী হলেও এককভাবে ওই মন্ত্রণালয় চালাতেন তিনি। এই সুযোগেই নেত্রকোনার অঞ্চলগুলোতে সন্ত্রাস আর নৈরাজ্য কায়েম করেন বাবর ও তার পরিবারের সদস্যরা।
হত্যা, ত্রাস, লুটপাত, দুর্নীতি, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলাসহ পুরো নেত্রকোনাকে জর্জরিত করেছিল বাবর গংরা। ওই সময়ে নিজ চোখে এলাকায় বাবরের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যে দেখেছেন নেত্রকোনার সন্তান বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা শফি আহমেদ।
শনিবার চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে তার নিজ কার্যালয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে নেত্রকোনা-৪ আসনে বাবরের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের কথা তুলে ধরেন তিনি।
বাবরের যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম:
লুৎফুজ্জামান বাবর একজন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী ও রাষ্ট্রীয় খুনি আখ্যা দিয়ে শফি আহমেদ বলেন: স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তিনি ও তার পরিবারের লোকজন একচেটিয়ে এলাকায় নৈরাজ্য কায়েম করেছে।
তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে এলাকায় আমি ভুগেছি। নেত্রকোনা জেলায় আমার সঙ্গে সম্পর্ক থাকার বর্তমানে নেত্রকোনা জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান প্রশান্ত প্রায় আট মাস জেল খেটেছে। কারণ সে শুধুমাত্র আমার লোক বলে।
মদনে বাবরের ত্রাসের রাজত্ব:
মদনের আওয়ামী লীগ দুর্বল ছিল জানিয়ে নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা শফি আহমেদ বলেন, যতোটুকু সম্ভব আমি মদনে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল আওয়ামী লীগ নিয়েই বাবরের সন্ত্রাস নির্মূল করছি। কারণ আমি জানতাম কেউ আঘাত হানলে প্রতিরোধটা কীভাবে করতে হয়।
মদনে বাবরের সন্ত্রাসটা শুরু হয় আমার চাচাতো ভাই শফিউল ইসলাম মানিকের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। ২০০১ সালে সে মন্ত্রী হবার পরে প্রথম কোরবানীর ঈদের আগের দিন রাতে তার ইশারায় আমার চাচাতো ভাই শফিউল ইসলাম মানিককে সন্ধ্যার সময় বুকের উপর উঠে জবাই করে হত্যা করে। ঈদের আগের দিন এটা একটা নির্মম ঘটনা। ঈদের দিন সকালে সেই লাশ মর্গ থেকে নিয়ে এসে মসজিদে জানাযা পড়িয়ে দাফন করা হয়।
তিনি বলেন, মদন উপজেলায় ৭৫ শতাংশ মুসলিম আর ২৫ শতাংশ হিন্দু। বাবরের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠা তার আত্মীয়রা (চাচাতো, মামাতো ভাইরা) হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর জুলুম নির্যাতন করে। ওই সময় মদনে থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি বিকাশ চন্দ্র বৈশ্য। যিনি মুক্তিযোদ্ধা ও সাঁতারু ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্যর ভাতিজা।
বিকাশ নিজেও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, বাবরের বাড়ির সঙ্গে খুবই অল্প দুরত্ব।কিন্তু বাবর তাকেও রেহাই দেয়নি, নিয়মিত অত্যাচার ও নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয়েছিল বিকাশ ও তার পরিবারের।আমি বিষয়টি জানতে পেরে বিকাশকে ঢাকায় চলে আসতে বলেছিলাম, কিন্তু সে আমায় বলেছিল আমি মুক্তিযোদ্ধা বাবরের এমন অত্যাচার আমার কাছে কিছু না।
শফি আহমেদ বলেন, মদনে বাবরের বাহিনী একেকটা ইউনিয়নে নানা রকম জুলুম নির্যাতন করত। যেমন এলাকার কোন ছেলের নামে চাকরির নিয়োগের চিঠি আসলে সেটা বাবরের ভাইয়েরা পোস্ট অফিসে বলে আসত তাদের বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য। পরে বাবরের ভাইয়েরা সেই নিয়োগ পত্রটি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ওই ছেলেকে দিত।
ওই সময় বাবরের ইন্ধনে একটা হিন্দু পরিবারের বিশাল সম্পক্তি অন্য একটা পরিবার দখল করে। এছাড়াও বাবরের বাহিনী মদনের মানুষের খেতের ধান কেটে নিয়ে যেত।এমনকি যারা মদনের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, এমনকি বিএনপি’র লোকজনকেও বাবর বাহিনী দ্বারা অপমানিত হতে হয়েছে।
খালিয়াজুরীতে বাবরের ত্রাসের রাজত্ব:
খালিয়াজুরীতে ফিশারি ছিল আমাদের সম্পদ জানিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক নেতা শফি আহমেদ বলেন: সমস্ত ফিশারি গুলো বাবরের লোকজন দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করছে এবং অনেক দখল করে নিছে। কিন্তু আমি যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি করা লোক বিষয়টি বাবর জানত, তাই আমার যতোটুকু শক্তি রয়েছে তা দিয়ে সব রক্ষা করতে না পারলেও কিছু ফিশারি রক্ষা করেছি।
খালিয়াজুরীর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরোওয়ার্দী না খেতে পেরে মারা গেছে, তার সব কয়টা ফিশারি বাবর বাহিনী দখল করেছিল। তিনি বলেন, বাবরের আত্মীয় স্বজন যারা মদন থেকে ছেড়ে এখানে বসবাস শুরু করে তারা খালিয়াজুরীর ভাটি বাংলার জংশন লিপ্সা বাজারের ইজারা জোরপূর্বক নিয়ে নেয়।
এ উপজেলায় জনসংখ্যার দিক দিয়ে ৭৫ শতাংশের উপরে হিন্দু রয়েছে। বাবরের লোকজন শুধু একটা কাজ করতে পারে নাই সেটা হল ধর্ষণ, কারণ আমার যারা নেতা ছিল তারা কঠিন ও দৃঢ় ছিল আর আমি যেহেতু সাহসী মানুষ এ কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের মা বোনের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে নাই।আর থানা পুলিশ ও বিষয়টা দেখেছে কারণ ছাত্র রাজনীতি করায় আমার বড় প্রভাব ছিল, আমি সব সময় খবর রাখতাম এবং ফোনে তাদের বললাম জুলুম নির্যাতন হল খুব খারাপ অবস্থা হবে।
মোহনগঞ্জে বাবরের ত্রাসের রাজত্ব:
বাবরের কিছু আত্মীয়-স্বজন এখানেও ছিল। তারা একপ্রকার মোহনগঞ্জ স্টেশন, বাস স্টেশন, কর্মক্ষেত্র গুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল। এমনকি খালিয়াজুরীর ফিশারির মাছগুলোয় মোহনগঞ্জ হয়ে ঢাকা আসত।সেগুলোয় বাবরের আত্মীয়রা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল।
শফি আহমেদ বলেন, মোহনগঞ্জ ছাত্রলীগের পৌর সহ-সভাপতি ছিল বাক্কি খান, দুর্দান্ত সাহসী ছেলেটাকে প্রকাশ্য দিবালোকে ছাত্রদলের ক্যাডাররা রামদা দিয়ে কুপিয়ে খুন করে।
লগি বৈঠার মিছিলে মোহনগঞ্জ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মীর কাশেমকে মিছিলের মাঝ থেকে টান দিয়ে নিয়ে গুরুতর আহত করে বিএনপির ক্যাডাররা। পরে ঢাকায় একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
নেত্রকোনায় বাবরের ত্রাসের রাজত্ব:
নেত্রকোনা সদরেও বাবরের সন্ত্রাসীরা নিজেদের ডালপালা অনকে দূর পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিল জানিয়ে শফি আহমেদ বলেন: নেত্রকোনা যুব লীগের সভাপতি স্বপন জোর্য়াদারের হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বাবর। ঢাকা থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করা হয়।
নেত্রকোনা উদীচী শিল্প গোষ্ঠীর ওপর যে বোমা হামলাটা হল তারপর দিন বাবর সেখানে গিয়ে বলল এটা হিন্দু জঙ্গিদের কাজ। পরে খোঁজ খবর নিয়ে দেখা গেল জেএমবি’র কাজ। এ মামলায় আমাকে, প্রশান্ত ও মিঠুকে জড়াতে চেয়েছিল বাবর।
সদরের ব্যবসা বাণিজ্য ঠিকাদারি একচেটিয়ে বাবরের সন্ত্রাসীরা করেছে। বাবর ঢাকা থেকে সরাসরি ডিসি এসপিকে বলে দিত এইটা অমুককে দিতে হবে এইটা তমুককে দিতে হবে।
তিনি বলেন, একবার নেত্রকোনা সাতপাই কলেজ রোডে একটা হিন্দু মেয়েকে ধরে বিএনপির ক্যাডাররা নিয়ে গেল হোস্টেলে, খবর শুনে পুলিশকে ফোন দিলাম, পুলিশ যাওয়ার আগেই পাড়ার ছেলেদের নিয়ে আম নিজেই চলে গেলাম। এরপর ওরা পালিয়ে গেল। পুলিশ আসার পর ওসিকে বললাম যদি এরকম খবর আর একবার শুনি তবে নেত্রকোনা শহর ব্লক করে দিব।
শফি আহমেদ বলেন, ২০০৪ সালের ২২ আগস্ট নেত্রকোণায় একটা জনসভা দিয়েছিল নেত্রী শেখ হাসিনা।আমাকে বলেছিলেন তোমার নিজের এলাকা একটু বিশেষ খেয়াল রেখ।ওইখানে কিছু একটা ঝামেলা হতে পারে।বাবর কিছু একটা ঝামেলা করতে পারে।আমরা কয়েকজন পরে নেত্রকোনায় চলে আসি। নেত্রী যদি বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ২১ আগস্ট হামলার মধ্যে না পড়ত তাহলে ২২ আগস্ট নেত্রকোনায় সেই হামলাটি হতো।
তিনি বলেন, বাবর আইনগত ভাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হবার পর নেত্রকোনা জেলায় পুরো অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সম্মুখে রেখেছিল।এছাড়াও তার আত্মীয় স্বজন দিয়ে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অপকর্ম করাত। বাবর কালো ব্যবসায়ী, তার এই কালো ব্যবসার সব দুই নম্বর বুদ্ধি এখানে কাজে লাগিয়েছিল।
রাজনীতির সঙ্গে বাবরের পরিবারের কোন সম্পৃক্ততা ছিল না:
লুৎফুজ্জামান বাবরের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার বারি ভাদারা গ্রামে। তার ভাই বোনদের মধ্যে একমাত্র উনিই হচ্ছেন অল্প শিক্ষিত, ম্যাট্রিক পাশ করার পর তিতুমীর কলেজে ভর্তি হন কিন্তু ইন্টার পাশ করছে কিনা স্পষ্ট করে বলা যায় না।
শফি আহমেদ বলেন, বাবরের পরিবারের সকলেই উচ্চ শিক্ষিত, উনার বোন ভগ্নিপতিরা কয়েকজন সচিব হিসেবেও অবসর গ্রহণ করেছেন।বলতে গেলে তারা সম্ভ্রান্ত বংশের লোক। উনার বাবা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে অবসরে যাওয়ার কথা থাকলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশেষ বিবেচনায় তিনি পুলিশ সুপার হিসেবে অবসরে যান।তাদেরও সহায় সম্পক্তি ছিল।কিন্তু তাদের সম্ভ্রান্ত পরিবারের মান সম্মান ধ্বংস করতে যা যা দরকার বাবর সবই করেছে।
ল্যাগেজ বাবর নামেই পরিচিতি ছিল বাবরের:
ঢাকা-ব্যাংকক রুটে ল্যাগেজ ব্যবসা করত বাবর। উনি ল্যাগেজ বাবর হিসেবেই পরিচিত ছিল। শফি আহমেদ বলেন, বাবর জাপানি ঘড়ি ক্যাসিও’র ছত্রছায়ায় লাগেজ ব্যবসাটি করত। এরসঙ্গে তিনি আদম ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত ছিল। এরপর তিনি বিভিন্ন দিক থেকে অর্থের মালিক হয়েছেন। তার সমস্ত অর্থটাই অবৈধ অর্থ।
ব্যাংকক থেকে আসা ক্যাসিও ঘড়ি তিনি বর্ডার দিয়ে ইন্ডিয়াতে পার করতেন, ওই সময় তিনি রাজশাহী বর্ডারে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। সেসময় এরশাদ ক্ষমতায় থাকায় রওশন এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনভাবে তিনি পার পেয়ে যান।বাবরের সব ইতিহাসই পুরোটাই কালো।
মদনে জনপ্রিয় ছিল বাবর:
নেত্রকোনা ৪ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন আবদুল মমিন।তিনি মারা যাওয়ার আগেই বিকল্প হিসেবে শফি আহমেদকে তৈরি করে রেখে যায়। আবদুল মমিন বঙ্গবন্ধু আমলের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, পরে মুশতাকের সময় দুটি মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন, কৃষি মন্ত্রী এবং খাদ্য মন্ত্রী।উনার এলাকায় জনসংযোগ ও জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা খুবই কম ছিল।
শফি আহমেদ বলেন, নেত্রকোনার সমস্যার সেখানকার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের কাছে ছেড়ে দিতেন আবদুল মমিন। তারা সব সমাধান করত। জনগণ বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রী হিসেবে তাকে ভালবাসতো আবার মুশতাকের মন্ত্রী হিসেবে ঘৃণা করত।
১৯৮৮ সালের বন্যায় নেত্রকোনা ৪ আসনে বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন বাবর। জনগণের সঙ্গে মমিনের সংযোগ না থাকায় বাবর সুযোগটি কাজে লাগায়। ঢাকায় নিয়মিত এলাকার লোকজন দেখা করতে আসলে সাহায্য করতেন তিনি। এরশাদের পতনের পর, তার মূলত ব্যবসা ছিল রুহুল আমিন হাওলাদের সঙ্গে এবং রওশন এরশাদকে দিয়েই তিনি সব সময় পার পেতেন।
জিপ উপহার দিয়ে খালেদার কাছে আসেন বাবর:
এরশাদের পতনের পর কথিত আছে বাবর খালেদা জিয়াকে একটা জিপ উপহার দেন।একজন নেতার সঙ্গে লেনদেন করে বিএনপি থেকে মনোনয়ন নেয়, এবং ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের আবদুল মমিনের বিপক্ষে নির্বাচন করে।
শফি আহমেদ বলেন, এলাকার মানুষ মনে করছে মমিন সাহেবকে ভোট দিয়ে কি হবে সে তো খোঁজ খবর নেয় না, তার চেয়ে বাবর ভাইকে ভোট দেই। এখানে মানুষের কাছে রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পায়নি বরং ব্যক্তিগত সংযোগের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে।এবং মমিন সাহেবের মতো জাতীয় নেতাকে তিনি পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছে।
আবার ১৯৯৬ সালে মমিনের কাছে বাবর পরাজিত হয়েছে।কারণ বাবর এমপি হওয়ার আগে মানুষের কাছে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা এমপি হওয়ার পর করে দিতে পারে নাই। দ্বিতীয় আদম ব্যবসার কারণে গ্রামে থাকা চাচাতো ভাইরা মানুষের কাছে থেকে টাকা পয়সা নিয়েছে, লোক পাঠাতে পারে নাই, এসব নিয়ে এলাকায় বিশেষ কেলেঙ্কারী হয় এলাকায়। ২০০১ সালে মমিন সাহেবের নিস্পৃহতা এবং অকর্মতার কারণে ওই সিটে আবারো বাবর বসে।
হাওয়া ভবন, তারেক ও বাবর:
২০০১ সালে নির্বাচনের পর তারেক রহমানের সঙ্গে যোগসূত্র হয় বাবরের। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী থাকলেও বাবরের এয়ারপোর্ট কেন্দ্রিক ব্যবসার হিসাব নিকাশ তারেক রহমানের সঙ্গে হাওয়া ভবনেই হতো। এভাবে সে তারেক রহমানের খুব কাছাকাছি চলে যায় তিনি।