চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

নেত্রকোনায় লালনের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ

নেত্রকোনায় ‘হেফাজতে ঈমান’ নামের একটি সংগঠনের দাবির মুখে লালন অনুসারীদের একটি নিয়মিত অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ওই অনুসারীদের বিরুদ্ধে এলাকায় লিফলেটও বিতরণ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় কোনো মামলা না হলেও পুলিশ বলেছে, এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতেই তারা এই ব্যবস্থা নিয়েছে।

তবে এসব ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন লালন ভক্তরা।

বিবিসি জানায়, নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার বাসিন্দা আবদুল হালিমের বাড়িতে লালন ভক্তদের নিয়মিত আসর বসত, যেখানে লালন গানের বাইরেও নানা বিষয়ে আলোচনা হতো।

কিন্তু কিছুদিন ধরেই ওই অনুষ্ঠান বন্ধের দাবি করে আসছিল স্থানীয় হেফাজতে ঈমান নামের একটি সংগঠন। তাদের দাবির মুখে সেই অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয় স্থানীয় পুলিশ। এরপর তাদের বিরুদ্ধে লিফলেটও ছড়ানো হয়। আবদুল হালিম জানান, এরপর থেকেই তারা ভয়ে আছেন।

আবদুল হালিম বলেন, প্রতি বছর ৩০ নভেম্বর তার বাড়িতে লালনের গানের আসর বসে। কিন্তু এ বছর একটি মহল কিছুদিন ধরেই এই আসর না করার জন্য বলে আসছিল। তারা ইউএনও’র কাছে একটি আবেদনও করে।

“এরপর থানার কর্মকর্তারা আমাদের অনুষ্ঠান না করার জন্য বলে যায়। না হলে ঝগড়ঝাঁটি হতে পারে,” বলেন আবদুল হালিম, “কয়েকদিন পর আমাদের বিরুদ্ধে একটি লিফলেটও বিতরণ করা হয় যে, আমরা নাকি অনৈসলামিক কাজ করি। কেন ‘জয় গুরু’ বলি, এরকম কথা নাকি ইসলামিক অনুভূতিতে আঘাত করে। সেখানে কাফের মুরতাদ বলা হয়, বলা হয় যে, আমাদের এই দেশের মাটি থেকে উচ্ছেদ করতে হবে।”

গত বছরও এই অনুষ্ঠানটি বাতিলের একদফা চেষ্টা করা হয়। তবে হেফাজতে ঈমানের কোনো সদস্যের সঙ্গে চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

কারও দাবির মুখে লালন ভক্তদের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ায় তাদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে কেন্দুয়া থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থেই তারা ওই পদক্ষেপ নিয়েছেন।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, “লালন ভক্তদের একটি গ্রুপ অনুষ্ঠান করতে চেয়েছিল। কিন্তু কিছু আলেম ওলামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন, যে তারা ইসলাম মানে না, তাদের যেন অনুষ্ঠান করতে দেওয়া না হয়।”

“সেখানে শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গের আশংকা আছে, তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আমরা তাদের অনুষ্ঠান না করার জন্য বলি। আর লিফলেটে কারও নাম উল্লেখ নেই। তাই কাউকে এককভাবে ধরতে পারিনি। তবে যারা অনুষ্ঠান না করার কথা বলেছিল, তাদের আমরা চাপ দিয়েছি। তারা বলেছে, এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা হবে না। ”