ফেনীর সোনাগাজী এলাকার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার চার্জশিটে ১৬ জনের প্রত্যেকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আগামিকাল আদালতে নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।
পিবিআইয়ের তদন্তের চার্জশিটে থাকা অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ জনেরই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চাওয়া হয়েছে।
চার্জশিটে থাকা অন্য আসামিরা হলেন, নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০) , সাইফুর রহমান মোহা্মাদ জোবায়ের (২১), মাকসুদ আলম (৫০), জাবেদ হোসেন (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আফছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা পপি (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন মামুন( ২২), মোহাম্মাদ শমীম (২০), রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০)।
মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সংস্থাটির প্রধান উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বনজ কুমার মজুমদার।
তিনি বলেন, চার্জশিটে থাকা আসামিদের মধ্যে ১২ জন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে ৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল। হত্যার পর তারা পরীক্ষায় অংশ নেয়।
বনজ কুমার মজুমদার বলেন, অধ্যক্ষের রুমেই বোরকা পড়ে ৩ জন ছেলে। পরে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে কেরোসিন দিয়ে আগুন ধরায়। আগুন ধরানোর সময় ২ জন মেয়েও যুক্ত হয়। তাদের মধ্যে শম্পা এবং মণি নুসরাতের গায়ে আগুন ধরার পর পরীক্ষার রুমে প্রবেশ করে এবং পরীক্ষা দেয়।
তিনি আরও বলেন, পুরো শরীর পুড়ে যখন হাত পায়ের বাঁধন খুলে যায়, তখন নুসরাত দৌড় দেয়। মূল গেটের সামনে গিয়ে নুসরাত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
তদন্তে ৯২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) ৪(১) ও ৪(১)/ ৩০ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এই চার্জশিট প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ হত্যা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলা, রুহুল আমিনসহ ২১ জন ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আলোচনায় আসা সোনাগাজীর সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
পিবিআইয়ের কথা মতো আগামীকাল যদি এ মামলার চার্জশিট জমা দেয়া হয়, তবে হত্যাকাণ্ডের দুই মাসের মধ্যেই এ চার্জশিট জমা দেয়া হচ্ছে।