বিভিন্ন প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিরপেক্ষ ও নিষ্ঠুরভাবে প্রকল্পের প্রভাব মূল্যায়ণের অনুরোধ জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
এছাড়া প্রকল্প পরিচালকদের আরও গতিশীল করতে সরকার চিন্তা-ভাবনা করছে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ২০২০-২১ অর্থবছরের নির্বাচিত চলমান প্রকল্পের নিবিড় পরিবীক্ষণ ও সমাপ্ত প্রকল্পের প্রভাব মূল্যায়ন সংক্রান্ত ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় এ কথা বলেন এম এ মান্নান।
কোনো কোনো কর্মকর্তা একাই একাধিক প্রকল্প পরিচালকের (পিডি) দায়িত্ব নিয়ে বসে আছেন। এমনকি ১৪টি প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছেন একজন পিডি। একজন পিডি একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকার এই অবস্থাকে সম্প্রতি ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ অবস্থায় সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের পিডিদের নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
কর্মশালায় অংশ নেয়া পিডিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সম্পর্কে অনেক আলোচনা হচ্ছে বাজারে। আপনারা তো সব দেখেন, বোবা-কানা নন আমাদের মতো। আপনাদের অনেক বেশি দায়িত্ব আছে। এটাকে কীভাবে আরও বড় করা যায়, শক্তিশালী করা যায়, আপনাদের চলার পথে বাধাগুলো কীভাবে সরিয়ে দেয়া যায়– এগুলো চিন্তা-ভাবনা চলছে। হয়তো নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে আসবো, কিন্তু চাপিয়ে দেব না। উভয়পক্ষে আলোচনা করে সেভাবে কাজ করবো।’
চলতি অর্থবছরে ২২টি প্রকল্প নিবিড় পরিবীক্ষণের জন্য এবং ৮টি প্রকল্প প্রভাব মূল্যায়নের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। বিশদ এই মূল্যায়নের জন্য নিযুক্ত ফার্মগুলোর প্রধানরাও কর্মশালায় অংশ নেন।
ফার্মের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদেরকে যারা সহায়তা করেন, সংস্থায় যারা আছেন তাদের মধ্যে অনেকে অবসর গ্রহণ করেছেন, সারাজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে এ কাজে এসেছেন। আপনাদের থেকে অত্যন্ত ক্ষুরধার, ফোকাসড, নিষ্ঠুর পর্যালোচনা আশা করি। কোনো খাতির নাই। নিরপেক্ষ, নিষ্ঠুর। ঠান্ডা পর্যালোচনা আপনাদের কাছ থেকে আশা করি। যাতে আমরা নিজেরা শিখি, বুঝি এবং নিজেদের শুদ্ধ করতে পারি।
বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আসা অভিযোগের বিষয়ে এম এ মান্নান বলেন, সব কাজে আমাদের অবশ্যই ফেয়ার মাইন্ডেড হতে হবে। প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ আসে। এসব পড়ে মনে হয়, আবেগে বা ক্ষোভে লিখেছে। তবু সেসব অভিযোগ শুনতে হবে। বিধি মোতাবেক আমরা যেন সবাইকে শুনি। ব্যক্তিগতভাবে যারা আমাদের কাছে আসবে, তারা যেন ফিল করে সভ্য, আইনানুগ প্রতিষ্ঠানে এসেছে। যেটা আইন দিয়ে চলে। বিরক্ত হলেও একবার, দুবার বিস্তারিত শুনতে হবে। কেন তার পয়েন্টটা ঠিক নয়, বুঝিয়ে বিদায় করতে হবে। রাগারাগি করবো না। এগুলো সার্বক্ষণিক করতে হবে।
কর্মশালায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠাকে নির্ধারিত সময়ে নিবিড় পরিবীক্ষণ ও প্রভাব মূল্যায়ণের কাজ শেষ করার পরামর্শ দেয়া হয়। পরামর্শক দলকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে যোগ্যতা সম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি চুক্তি সই হওয়ার ৪ মাসের মধ্যে মূল্যায়ণ কাজ শেষ করার তাগিদ দেয়া হয় অনুষ্ঠানে।