চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

নিষ্ক্রিয় বসে থাকার আর কোনো সুযোগ নেই

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা

কপ-২৫ নামে পরিচিত ২৫তম জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বনেতাদের সতর্ক করে বলেছেন, আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের মতো অরক্ষিত দেশগুলোর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। আমরা যদি শিশুদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হই, তাহলে শিশুরা আমাদের ক্ষমা করবে না।

এই সময়টাকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ‘গুরুত্বপূর্ণ বাঁক’ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেছেন, ‘আমরা সম্ভবত আমাদের সময়ের সবচেয়ে কঠিন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মানব ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঁক অতিক্রম করছি।’

গত প্রায় দুই দশক ধরে আমরা জানি, জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের কঠিন এক বাস্তবতা। এই মুহূর্তে তা মানবজাতি, বন-পরিবেশ, প্রতিবেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অপূরণীয় ক্ষতির কারণ। কিন্তু তা ঠেকানোর ক্ষেত্রে বিশ্বের বড় বড় দেশ; বিশেষ করে যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনে দায়ী- তারা এখনো উদাসীন। অথচ সেই ১৯৯২ সালে থেকে শুরু হওয়া ধরিত্রী সম্মেলনে প্রতিবারই সেইসব দেশ গ্রীন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমাতে প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করেনি।

সেই কারণেই আজ বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। ক্ষয়ক্ষতির দায় বহন করতে হচ্ছে। যদিও এতে এসব দেশের কোনো দায় নেই বললেই চলে। আরেকটি বড় বিষয় হলো, দায়ী দেশগুলো বহুদিন ধরে বলছি, ক্ষতিপূরণ দেবে। এ জন্য যে ফান্ড গঠন করা হয়েছে; তাতেও প্রতিশ্রুত অর্থ তারা দেয়নি। আর এতে আরো বেশি বিপদের মুখে পড়েছে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো।

তার মানে বড় দেশগুলো এখনো তাদের যে দায়িত্ব, তা পালনে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের এই ব্যর্থতা সারাবিশ্বকে হুমকিতে ফেলেছে। তাই আজ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কাছে বড় প্রশ্ন- যে বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন; তা নিয়ে তারা কেন নীরব? কেন তারা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিচ্ছে না?

অথচ সবাই এক বাক্যে স্বীকার করছে, এই সংকট আন্তর্জাতিক জলবায়ু শাসনব্যবস্থা ধ্বংস করে দিতে পারে। সেই সাথে সমুদ্র তীরবর্তী অনেক দেশকে ভাসিয়ে দিতে পারে সুনামি, আইলা কিংবা সিডরের মতো কোনো দুর্যোগে। এরই মধ্যে বাংলাদেশসহ অনেক দেশের সমুদ্র স্তর বেড়ে গেছে। মরুকরণ ঘটছে অনেক অঞ্চলে। অনাবাদী হচ্ছে লাখ লাখ হেক্টর কৃষিজমি।

আমরা মনে করি, এখন আর কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে ঝুঁকিতে দেশগুলোকে সাথে নিয়ে দায়ী দেশগুলোর বিরুদ্ধে শক্তিশালী জোট গড়ে তুলতে হবে। নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকার আর কোনো সুযোগ নেই।