নির্মাণ সামগ্রী রড, সিমেন্ট ও পাথরের দাম এবং গৃহ ঋণের সুদ হার বেড়ে যাওয়ায় ফ্ল্যাটের দাম ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে রিহ্যাব আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ কথা বলেন।
আবাসন ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গৃহ ঋণে ব্যাংক সুদের হার দুই অংকের ঘরে উঠায় ফের হুমকির মুখে পড়তে পারে আবাসন খাত। এ খাতকে বাঁচাতে দ্রুত নির্মাণ সামগ্রীর দাম ও ব্যাংক সুদের হার কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, দীর্ঘদিনের মন্দা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও অস্থির অবস্থার মধ্যে পড়তে যাচ্ছে নির্মাণ শিল্প।
নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, এ খাতের প্রধান উপকরণ ৬০ গ্রেডের রডের বর্তমান প্রতি টনের বাজার মূল্য ৬৫ থেকে ৬৮ হাজার টাকা এবং ৪০ গ্রেডের রডের বাজার মূল্য ৫৩ থেকে ৫৬ হাজার টাকা। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেবেও এক সপ্তাহ আগে ৬০ গ্রেডের বাজার মূল্য ছিল ৫২ থেকে ৫৩ হাজার আর ৪০ গ্রেডের রড়ের বাজার মূল্য ৪২ থেকে ৪৩ হাজার টাকা।
‘আর এক বছরে রডের বাজার মূল্য প্রতি টনে বেড়েছে ২৩ শতাংশ। এছাড়া সিমেন্টের দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং ইটের দাম বেড়েছে হাজারে এক হাজার টাকা। ৬ মাস আগে প্রতি বস্তা সিমেন্ট বিক্রি হয়েছিল ৩৬০ থেকে ৩৯০ টাকায়। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৪২০ থেকে ৪৬০ টাকায়। একই সময়ে বেড়েছে পাথর আমদানি খরচও।’
রিহ্যাব সভাপতি বলেন, এই মূল্য বৃদ্ধি আবাসন খাতের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে কোনো কোনো প্রকল্পের ফ্ল্যাটের দাম বাড়তে পারে। বিশেষ করে জমির উচ্চমূল্য, সাইনিং মানির পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে ক্রেতাদের উপর অধিক চাপ পড়বে। অনেকেই ইতোমধ্যে নির্মাণকাজ সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ঋণের সুদ হার বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, অপ্রত্যাশিতভাবে বর্তমানে গৃহায়ন খাতে ঋণের সুদহার বেড়েছে। অধিকাংশ ব্যাংক গৃহ ঋণের সুদ দুই অংকের ঘরে নিয়ে গেছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রিহ্যাবের জ্যৈষ্ঠ সহ সভাপতি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন জানান, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ায় ফ্ল্যাটের দাম ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বাড়তে পারে। এতে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হবে। প্রকারভেদে রডের দাম টনে অন্তত ১৪ হাজার টাকা কমানো উচিত বলে মনে করেন তিনি।
বর্তমানে অবিক্রিত ফ্ল্যাটের সংখ্যা ১১ হাজারের ওপরে বলেও দাবি করেন নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের প্রথম সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া ও পরিচালক কামাল মাহমুদ প্রমুখ।