এইচ টি ইমাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা। তার পূর্ণ নাম হোসেন তওফিক ইমাম। ১৯৩৭ সালের ১৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরে তার জন্ম। পিতা মরহুম তাফসির উদ্দীন আহমেদ বিএ বিএল এবং মাতা মরহুম তাহসিন খাতুন। সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ায় স্থায়ী নিবাস।
শিক্ষা জীবনের শুরু রাজশাহীতে এবং পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া ও কলকাতায়। ঢাকা কলেজিয়েট হাইষ্কুল থেকে ১৯৫২ সালে ম্যাট্রিক। ১৯৫৪ সালে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট। ১৯৫৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থশাস্ত্রে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।
তৎকালীন নিখিল পাকিস্তানে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান অধিকার করে তিনি ১৯৬১ সালে সিএসপি হন। এর আগে তিনি রাজশাহী সরকারী কলেজের অর্থনীতি বিভাগে লেকচারার পদে কর্মরত ছিলেন। ছাত্রাবস্থাতেই রাজনীতি সচেতন ছিলেন। তিনি ১৯৫২ সাল থেকে পূর্বপাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন এবং প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট হন। ১৯৫২-৫৪ শিক্ষাবর্ষে পাবনা কলেজ ছাত্র সংসদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক, ১৯৫৪-৫৬ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী সরকারী কলেজ ছাত্র সংসদে সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৫৬-৫৭ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়ন ডাকসু’র কমনরুম সেক্রেটারি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৬২-৬৩ সালে তিনি রাজশাহী জেলার অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার, ১৯৬৩-৬৪ সালে নওগাঁর এসডিও, ১৯৬৪ সালে নারায়ণগঞ্জের এসডিও, ১৯৬৫ সালে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, ১৯৬৫-৬৭ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র মন্ত্রী খাজা শাহাবুদ্দিনের একান্ত সচিব, ১৯৬৮-৬৯ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের অর্থবিভাগের উপ সচিব পদে দায়িত্ব পালন করেন।
মাঝখানে ১৯৬৭-৬৮ সাল লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকস এ অধ্যয়ন করেন। চাকুরি জীবনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সড়ক ও সড়ক পরিবহণ বিভাগের সচিব, প্ল্যানিং ডিভিশনের সচিব, প্ল্যানিং কমিশনের সদস্য, পিএটিসি’র প্রকল্প পরিচালক এবং যমুনা বহুমুখী সেতু কর্তৃপক্ষের কার্য নির্বাহী পরিচালক পদের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৬-৯৭ সালে অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন। ৬০ এর দশকের পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক অবস্থা তাকে ক্ষুব্ধ করে। সরকারের উচ্চপদে অধিষ্ঠিত থাকায় তার চোখে পাকিস্তান মুসলিম লীগ ও সামরিক প্রশাসকদের শোষণ, বৈষম্য, বঞ্চনার রূপ প্রকট হয়ে ওঠে। ৭১ এর ভয়াল পঁচিশে মার্চ রাতের সংবাদ পাওয়ার আগেই দেশের সংকটজনক পরিস্থিতির কর্মপন্থা নির্ধারণ করে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ, বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংকট মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নেন।
মুক্তিযুদ্ধকালে ১৯৭১ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের আহ্বানে পূর্বাঞ্চলের আঞ্চলিক প্রশাসনের পদে থেকে মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদে যোগদান করেন। ১৯৭৫ সালের ২৬শে আগস্ট পর্যন্ত তিনি এই পদে আসীন ছিলেন। বিজয়ের অব্যবহিত পর বাংলাদেশের বিপর্যস্ত প্রশাসন ব্যবস্থা সচল করে তোলা এবং দেশ পুনর্গঠনের কাজে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অন্যান্য সহকর্মী এবং মন্ত্রিবর্গের সঙ্গে তিনি নিয়োজিত ছিলেন।
এই দায়িত্বে সাড়ে চার বছরে তিনি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকারের নতুন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, করপোরেশন ইত্যাদির রূপরেখা তৈরি ছাড়াও পাকিস্তান আমলের পুরাতন নিয়ম কানুন ও পদ্ধতির আমূল সংস্কারে মুখ্য ভূমিকা রাখেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এর নিরঙ্কুশ জয়ে অগ্রণী ভুমিকা রাখেন তিনি। সম্প্রতি নতুন সরকারের সাম্প্রতিক নানা প্রসঙ্গে কথা বলেন এইচ টি ইমাম।
প্রশ্ন : নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে বিশ্বের দিকে তাঁকালে দেখা যায়- তা ভালো ফলাফল বয়ে আনে না। সেই দিক দিয়ে এই সরকার কতোটা নিরাপদ?
এইচ টি ইমাম : বিভিন্ন সময়ে নানা ধরণের সরকার আসেন। কোন সময় নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে আসে। আবার অনেক সময় ঝুলন্ত পার্লামেন্ট নিয়ে সরকার আসে। আমি বলছি যে দেশে পার্লামেন্টারি সিস্টেম সেই দেশের কথা। আর প্রেসিডেনশিয়াল ফর্ম হলে অবশ্য অন্য কথা? যেমন, আমেরিকায় এখন সংকট চলমান আছে। বৃটেনেও সংকট চলছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও সংকট চলছে। ভারতে বিজেপি যখন ক্ষমতায় আসে তারা তখন বিরাট সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে এসেছিলেন।কিন্তু অতি সম্প্রতি প্রাদেশিক নির্বাচনগুলোতে দেখা গেলো তারা কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। তাই আমি নিরাপদ কিংবা বিপদজনক বলবো না। ওই দৃষ্টিভঙ্গিতে না দেখে- আমি দেখি সবসময় ইতিবাচকভাবে। কারণ আমি খুব আশাবাদী মানুষ। সামনের দিকে তাঁকাই। এই শিক্ষা পেয়েছি বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে। রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কে দূরদৃষ্টি দরকার। অনেক দূরে তাঁকিয়ে দেখা- তা কি রকম হতে পারে? তার সুফলগুলো আজকে এখন আমরা দেখছি। ঠিক ওই জিনিসটি তাঁরই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি তিনি সেগুলোর সবকিছুই ধারণ করেন। ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে তারপরে যেভাবে তিনি কাজ করছেন। প্রথমে মূল সমস্যা ছিল আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দূর্বলতা। এই সংগঠনকে তিনি গড়ে তুলেছেন। সারাদেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন। প্রতিটি জায়গায় যেখানে বিভাজন ছিল, বিভেদ ছিল তাদেরকে একত্রিত করেছেন। একত্রিত করে নিয়ে এসে দল যখন সুসংগঠিত হয়ে গেছে- তখন তিনি শুরু করেছেন দ্বিতীয় কাজ।
তাহলো ভাত এবং ভোটের অধিকার। প্রথম থেকেই তিনি এই কথাগুলো বলতেন। আগের মেনোফেস্টো তো আমরা এই কথা অনেকবার বলেছি যে, ভাত এবং ভোটের অধিকার। ভাত মানে কি? প্রত্যেকের পেটে অন্ন থাকবে। খাবারের চিন্তা করতে হবে না এবং সেই সাথে আমাদের মৌলিক যেসব চাহিদা তা রাষ্ট্র মেটাবে।কিন্তু তারপরেও বড় জিনিস হলো গণতান্ত্রিক অধিকার। গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্যে যে নেতৃত্ব প্রয়োজন ছিল তা তিনি সম্মুখ থেকে দিয়েছেন। আমরা যাকে বলি- লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট।
প্রশ্ন : তার মানে তৃণমূল থেকে সংগ্রাম করে আসা আওয়ামী লীগ একাদশ সংসদ নির্বাচনে যে সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেলো তা সম্পুর্ণ নিরাপদ?
এইচ টি ইমাম : অবশ্যই। আমি নির্বাচনের দুই দিন আগে থেকে দেখলাম নারী ভোটারদের মধ্যে বিপুল জাগরণ। এর কারণ হলো আমরা সামাজিক নিরাপত্তা বলয় তৈরী করতে পেরেছি। বৃদ্ধা, বৃদ্ধ, বয়ষ্ক ভাতা, যাদের মেয়েরা ষ্কুলে যায় ক্লাস টেন পর্যন্ত বই বিনামূল্যে পায়। তার উপরে মায়েদের জন্যে ভাতা সরাসরি তার একাউন্টে যাচ্ছে। ৭০ এর পরে ৭৩ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এই রকম বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছিলো। বয়স তো অনেক হলো? ছোটবেলা থেকে দেখছি- এখন বাংলাদেশে কোন গ্রামে কুঁড়ে ঘর খুঁজে পাওয়া যাবে না। টিনের ঘরও কম। এবারের নির্বাচনে নারী ভোটারদের উত্থান- তা ধীরে ধীরে শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে উঠছে। অন্যদিকে আমি যে জন্যে গর্ববোধ করি এবং আমি খুব আনন্দিত তা হলো- তারুণ্যের যে শক্তির কথা আমরা বলেছি। এটি শুধু আমাদের ইশতেহারের কথা নয়। তারা দেখিয়ে দিয়েছে যে, ডিজিটাল বাংলাদেশে নানা সুবিধা পাওয়ার ফলে গত দশ বছরে আমরা একটা জিনিসে সক্ষম হয়েছি যে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সবার মধ্যে এসে গেছে। তা ইয়াং জেনারেশনের ভেতরে এমনভাবে প্রোথিত হয়ে গেছে যে, যখনই বিএনপির সাথে জামায়াত এবং ড. কামাল হোসেন গিয়ে একসাথে মিলে ফ্রন্ট করলেন। তারা ভাবছিলেন যে, আমরা বিরাট একটা কিছু করে ফেললাম। কিন্তু তারা বুঝতেই পারেন নাই যে, গ্রামে গঞ্জে নীরব বিপ্লব হয়ে গেছে। সেই বিপ্লব আমি প্রথমে বলেছি- নারী ভোটারদের কথা। আর একটি হলো তরুণদের মধ্যে। তাই এখন আমাদের সামনে বিশাল একটি সুযোগ। আমরা যেসব কথা বলেছি এবং ভবিষ্যতে কোন পথে যাব? যেমন, এবারের ইশতেহার লক্ষ্য করে দেখবেন আমরা প্রথমেই একটি বিবরণ দিয়েছি যে, এর আগে ইশতেহারের কি কি কাজ করার ছিল এবং তা আমরা করেছি। আমাদের অর্জনগুলো কি ছিল এবং এরপরে এখন আমরা কোথায় কোথায় যাব? এটি কোন গতানুগতিক ইশতেহার নয় যে- আমরা এটা করে দেব, সেটা করে দেব- তা নয়? আমাদের উদ্দেশ্য কি? কোন জায়গায় যাব? লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করে সেই ভাবে করেছি। আমার নিজের মত হলো- এটি আমাদের পার্টির ফোরামেও আলোচনা করেছি তখনও বলেছি একই কথাই যে, এখন আমরা যে গতিতে যাচ্ছি। আমাদের জাতীয় প্রবৃদ্ধির যে হার সাত দশমিক সাত আট এবং এটিতে ঠেকে থাকলে তো চলবে না?
প্রশ্ন : ডাবল ডিজিটে যেতে হবে?
এইচ টি ইমাম : ডাবল ডিজিটে যেতেই হবে। তাহলে এখন কয়েকটি জিনিস করা দরকার। মোটামুটি সামগ্রিকভাবে বলতে পারি- সুশাসন। গুড গর্ভনেন্স মানে যে, শুধু নিরাপত্তা বিধান করা নাগরিকদের তা নয়?
প্রশ্ন : শরীক জোটকে বাদ দিয়ে মন্ত্রী সভা গঠিত হয়েছে। তারা সংসদে এবং সংসদের বাইরে গিয়ে যদি সমালোচনা শুরু করে?
এইচ টি ইমাম : গণতান্ত্রিক পরিবেশে আলোচনা সমালোচনা তো থাকবেই এবং একটি দল যদি নিজের অবস্থানে ঠিক থেকে তাদের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারে এবং সমালোচনা যদি ধ্বংসাত্বক না হয় অর্থাৎ কেউ যদি বলে বোমা মারো বা অগ্নি সন্ত্রাসের কথা ওই ধরণের কোন কিছু না হলে সমস্যা নাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবার সুষ্পষ্ট বলেছেন। আমাদের এবারের মূল কাজই হবে দুর্নীতি, মাদক এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান আগে থেকেই আছে এবং এই ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছি। মাদকের ব্যাপারে যে সব তথ্য এখনো পাই তা হলো- এখনো মাদক বিশাল বিস্তার লাভ করেছে। মাদককে নিয়ন্ত্রণে আনতেই হবে। মাদক থেকেই কিন্তু দুর্নীতি হয়।
ইন্টারন্যাশনাল স্মাগলিং শুরু হয় মাদক দিয়ে। এরপরে আসে মানব পাচার এবং তারপরে হয় অস্ত্রপাচার। এই পাচারগুলো এখন পৃথিবীব্যাপী চলছে। কাজেই এইগুলোতেও আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রেখে কিভাবে এগিয়ে যেতে পারি তার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এই জায়গায় আমাদেরকে অন্য দলগুলোর আস্থাও অর্জন করতে হবে- আমাদের সঙ্গী যারা। এখনো আমরা ১৪ দলেই আছি। ১৪ দল কিন্তু ভেঙে যায়নি? ১৪ দলের শরীক যারা ছিলেন তারা মন্ত্রীত্ব পান নাই। কিন্তু তারা তো পার্লামেন্টে থাকবেন এবং তারা অনেকেই হেভিওয়েট? এমনও হতে পারে? স্বতন্ত্র যারা আছেন তারা বিরোধী দলে যাবে। এর মধ্যে থেকে আরও দুই একজন এসেছেন এবং নতুনভাবে আরও আসবেন।
প্রশ্ন : শরীক দলের মন্ত্রীত্ব না পাওয়া- পরে যদি ক্ষোভে রুপান্তরিত হয়?
এইচ টি ইমাম : কিন্তু তারা সমালোচনা কিভাবে করবেন? তারা অতীতে যে সমস্ত কাজ করেছেন- সমালোচনায় তো নিকট অতীতের কথাই আসবে যে, গত ৫ বছরে আপনি কি করেছিলেন? এই প্রশ্ন উঠবে না?
প্রশ্ন : অবশ্যই উঠবে?
এইচ টি ইমাম : তাহলে সেই প্রশ্ন যদি ওঠে তখন তিনিও তো ভার্নারেবল?
প্রশ্ন : সরকারকে সমালোচনায় ফেলবার কোন সুযোগ নাই- তাই কি?
এইচ টি ইমাম : নিশ্চয়ই।সরকার যা কিছু করেছেন তারা তাতে অংশীদার ছিলেন। তারা তাতে সমর্থন দিয়েছেন। এখন রাতারাতি হঠাৎ করে যদি অন্য কথা বলেন তা কি গ্রহণযোগ্য হবে? জনসমর্থন তো পাবে না?
প্রশ্ন : দলে সিনিয়ররা কিন্তু অপরিহার্য কিন্তু এবার সিনিয়রদের একটু দূরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। দল কি এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়বে না?
এইচ টি ইমাম : আমি এই ব্যাপারে ভিন্ন মত পোষণ করি। মোটেও সিনিয়রদের দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়নি। আমাদের ইতিমধ্যে নির্বাচনের পরে দুটো বর্ধিত সভা হয়েছে। আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং কার্যনির্বাহী কমিটিই মূল। কার্যনির্বাহী কমিটির ভেতরে প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং অন্যরা সবাই আসেন আর উপদেষ্টা মন্ডলী একসাথে এবং দুটোতেই আমাদের সভাপতি হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনা নতুনদেরকে স্পষ্ট করে বলেছেন- ‘দেখুন, যারা সিনিয়র ছিলেন কিন্তু এবার মন্ত্রীত্বে নেই তারাই কিন্তু ভিত্তি রচনা করেছেন। তারা যে ফাউন্ডেশন করেছেন তাদের যে কন্ট্রিবিউশন তা অবশ্যই স্বীকৃতি দিতে হবে। তাদের অতীতের যে কার্যকলাপ এর ফলেই আজকে শিল্পে কৃষিতে এতো ভাল করছি আমরা।’ কৃষিতে মতিয়া চৌধুরীর অবদান বিশাল। শিল্পে এবং বাণিজ্যে তোফায়েল আহমেদ সাহেবের অবদান বিরাট। আমীর হোসেন আমু সাহেবেরও অনেক অবদান। এই রকম সিনিয়র যারা তারা তাদের অবদান রেখেছেন। এই কথাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সভাপতি হিসেবে বলেছেন নতুনদের যে, আপনারা এসেছেন তাই ভাববেন না- আগেরজনদের বিশেষ ব্যর্থতার জন্যে বাদ দিয়েছি তা নয়? তাদের সফলতার ফলেই যে ভিত্তি রচিত হয়েছে এই ভিত্তির উপরে ভর করেই আপনারা এগিয়ে যাবেন। প্রকাশ্যে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো এবং তাদের অবদানের স্বীকৃতি তাতে আমি মনে করি তাদেরকে দূরে ঠেলে দেওয়া হয়নি।
একটা কথা মনে রাখতে হবে- সরকারের সাথে পার্টি কিন্তু বিশেষভাবে সম্পৃক্ত। তাই পার্টি থেকে যেসব নির্দেশাবলী আসবে এই হেভিওয়েট যারা তারা তো ওইখানে থিংঙ্ক ট্যাংক হিসেবে কাজ করবেন। এরপরে পার্লামেন্ট যখন শুরু হবে। তখন সংসদীয় কমিটি হবে তখন সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানও হয়তো এরাই হবেন। তখন তারা তো ভাল ভুমিকা রাখতে পারবেন।