চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। তবে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য যে ৭ দফা দাবি তারা দিয়েছেন সেই দাবি থেকে ফিরে আসবেন না বলে জানিয়েছে তারা।

রোববার  জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন থেকে এ কথা বলেন ড. কামাল হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলটির মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে: একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এর ন্যূনতম শর্ত এখনো পূরণ হয়নি। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরও বিটিভিসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালানো হচ্ছে যা নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

তিনি বলেন, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে সাবেক নির্বাচন কমিশনার শামসুল হুদাসহ দেশের প্রায় সকল দল ও জনগণের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সরকার ও নির্বাচন কমিশন ইভিএম ব্যবহারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত বাতিল করেনি। এরকম একটা পরিস্থিতিতে একটা অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। তাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত কঠিন৷ কিন্তু এরকম ভীষণ প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের অংশ হিসাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আমাদের দাবিকৃত সাত দফার বিস্তারিত বিচার বিশ্লেষণের জন্য আরো আলোচনা প্রয়োজন ছিল। সেই উদ্দেশ্যে আমরা দাবি করেছিলাম উভয়পক্ষের মধ্যে আরও কয়েকটি সংলাপ অনুষ্ঠিত হোক। তাই আমরা যৌক্তিকভাবেই চেয়েছিলাম সংলাপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন যেন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করে। আমাদের দ্বিতীয় দফা সংলাপের আগেই নির্বাচন কমিশন জানায়, নির্বাচনে অংশীজন একমত হলে তফসিল পিছিয়ে দেবেন তারা। এতে সরকার আমাদের নির্বাচনের তফসিল পেছানোর আহ্বান সাড়া দেয়নি।

একটি অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যে ৭ দফা দাবি আমরা এরই মধ্যে দিয়েছি, সে দাবি থেকে আমরা সরে আসছি না। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নির্বাচনে তফসিল পিছিয়ে দেওয়ার দাবি। আমরা নির্বাচনের বর্তমান তফসিল ঘোষণা বাতিল করে এক মাস পিছিয়ে দিয়ে নতুন তফসিল ঘোষণা করার দাবি করছি।

এসব দাবি আদায়ের সংগ্রাম জাতীয় ঐক্যফন্ট অব্যাহত রাখবে। সে আন্দোলন সংগ্রামের পথে নির্বাচনে অংশগ্রহণকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিবেচনা করছে জাতীয় ঐক্যফন্ট।

ড. কামালের পক্ষ থেকে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর পাঠ করা ঘোষণায় আরো বলা হয়, একটা অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের যাবতীয় দায়িত্ব সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের৷ নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতির পাশাপাশি ঐক্যফ্রন্ট সরকার ও নির্বাচন কমিশনের আচরভের উপর কড়া নজর রাখবে। জনগণের দাবি মানা না হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় দায়িত্ব সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে।

ঐক্যফ্রন্ট ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন এবং আন্দোলন করবে। আমাদের আন্দোলনও চলবে। ঐক্যের বিজয় আসে৷ আমাদেরও আসবে।

এসময় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী প্রতীক কী হবে এমন প্রশ্নের উত্তর পরে জানানো হবে বলে জানান তিনি৷

সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনী প্রচারণার সময় রাখা যায় ২১ দিন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তা গ্রাহ্য করে ২৩ দিন রেখেছে। এর জন্য ঐক্যফ্রন্ট আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলেও ঘোষণাপত্রে জানান ড. কামাল হোসেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দীন সরকার, ডা.জাফরউল্লাহ চৌধুরী সহ আরও অনেকে।