নির্বাচনের আগে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকার চাল নিয়ে কোনো অনিয়ম দেখতে চান না বলে কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ার করেছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।
বুধবার খাদ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি সম্পর্কিত মতবিনিময় সভায় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি ফুড) ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের (ডিসি ফুড) উদ্দেশ্যে মন্ত্রী একথা বলেন।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে বর্তমান সরকারের সময়ে ২০১৬ সালে সর্বপ্রথম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষে এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত করতেই সরকারের এই উদ্যোগ। এ লক্ষ্যে গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৮৫ লাখ টন এবং ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ২ দশমিক ৯৮ লাখ টন চাল বিতরণ করা হয়।
আগামী মাস (সেপ্টেম্বর) থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা দরে ৩০ কেজি করে চাল দেবে সরকার।
নীতিমালা অনুযায়ী বছরের মার্চ, এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এই পাঁচ মাস ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘১০ টাকার চালের কর্মসূচিতে সুবিধাভোগীদের তালিকা করার ক্ষেত্রে কিছু ভুল-ভ্রান্তি থাকতে পারে। কিন্তু এবার মোটামুটি নির্ভুলভাবে এই তালিকা করে চাল বিতরণ করতে চাই। কারণ এটা নির্বাচনের বছর, আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন। নির্বাচনের বছরে চাই না কোনো রকম অনিয়ম হোক, কোনো রকম অনিয়মের চিত্র পত্র-পত্রিকায়, মিডিয়ায় আসুক।’
চালের কোনো ঘাটতি নেই উল্লেখ করে তিনি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘অত্যন্ত সচেতন থাকতে হবে। কোথাও যাতে কোনো অনিয়ম না হয়। অনিয়ম ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তা সংশোধনের ব্যবস্থা করতে হবে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তা বিধানে মানুষের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে আড়াই কোটি মানুষ এর সুফল ভোগ করছে। কিন্তু এই কর্মসূচি নিয়ে পত্রপত্রিকায় অনেক নিউজ এসেছে। সেগুলো থেকে সাবধান হয়েছি। এখন যে কেউ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে যেকোনো স্থানের সুবিধাভোগীদের সংখ্যা, নাম-ঠিকানা দেখতে পারেন।’
খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের বছরে কোনো পক্ষ সরকারকে ননপপুলার (অজনপ্রিয়) করার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে সরকারের দোষত্রুটি তুলে ধরার চেষ্টা করতে পারে। এবার সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। একটি পক্ষ সেই চেষ্টা করতে পারে, তাই এ ব্যাপারে আপনারা সতর্ক থাকবেন।’
তিনি বলেন, ‘রেকর্ড পরিমাণ মজুদ আমাদের এখন রয়েছে। বাজারে চালের দাম বাড়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই। পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ আছে আমাদের।’
এর আগে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় কুড়িগ্রামে পুষ্টি চাল বিতরণ করা হয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এবার নতুন ৮টি উপজেলায় পুষ্টি চাল দেয়া হবে। এগুলো হলো- ঢাকার কেরানীগঞ্জ, গাজীপুরের কালীগঞ্জ, গোপালগঞ্জের মোকছেদপুর, ফরিদপুর সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও বিজয়নগর, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ এবং বরগুনার বামনা উপজেলা।
খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আরিফুর রহমান অপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ।