নিরাপদ ক্যাম্পাস ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম ভবনের সামনে আয়োজিত এ মানববন্ধনে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী।
এসময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে প্রতিবাদ জানান। প্ল্যাকার্ডগুলোতে লেখা ছিল- ‘হাতুড়ির জ্ঞান পেরেকের উপর, ছাত্রের উপর নয়’; ‘আমার ক্যাম্পাসে আমি নিরাপদ তো’? ‘ছাত্রের দায় নিবেন না কেন’? ‘ছাত্র হয়রানি বন্ধ কর’; ‘আমাদের ক্যাম্পাস আমাদের ঘর,এখানে কেন আমরা পর’; ইত্যাদি।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে যেসব হামলা হয়েছে সকল হামলার নিন্দা জানান। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী এবং শহীদ মিনারে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর যে হামলা হয়েছে তার বিচার দাবি করেন। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার নিশ্চিতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানান তারা।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বলেন,‘ আমরা শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে সমর্থন করে আসছি। কারণ এই আন্দোলন একটি যৌক্তিক আন্দোলন। কিন্তু আমরা তখনই শিক্ষার্থীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি,যখন কেবল শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আজকে অনেক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাশে এসে দাঁড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু তারাও নানা ভয়ভীতির কারণে আসতে পারছেন না। এখানে একটি বিষয় বলা দরকার। যারা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করেছে,তাদের বিচার না করে উল্টো যারা নির্যাতন-নিপীড়ন ও হামলার শিকার হয়েছে, তাদেরকে রিমান্ডে দেয়া হয়েছে। এটা কেমন বিচার? আমরা ছাত্রদের মুক্তি দাবি করছি।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, ‘রাষ্ট্র যেভাবে হুকুম দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঠিক সেভাবে কাজ করছে। যখন কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সরকার বলছে যৌক্তিক, ঠিক তখনই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও বলছে যৌক্তিক। এটা কেমন প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার করতে প্রশাসন তৎপর নয়। তারা রাষ্ট্রের ইচ্ছা বাস্তবায়ন করতে ব্যস্ত । যেসব শিক্ষার্থী আজকে নিপীড়নের শিকার তারাই আবার রিমান্ডে নির্যাতন ভোগ করছে। আমরা গ্রেফতারকৃত সকল শিক্ষার্থীর নি:শর্ত মুক্তির দাবি করছি।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক তানজীম উদ্দিন খান, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী শিক্ষক ড. রুশাদ ফরিদী সহ আরো অনেকে।