পানামা পেপারস এ কর ফাঁকির গোপন তথ্য ফাঁসে নিজ পরিবারের নাম আসায় তা প্রমাণে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ।
পানামা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মোস্যাক ফনসেকায় নাম আসে নওয়াজের ছেলে ও মেয়ের মালিকানাধীন কোম্পানির।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে নওয়াজ বলেছেন, তার পরিবার অনৈতিক কিছু করে থাকলেও তা প্রমাণে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ওই তদন্ত দলের নেতৃত্বে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি থাকবেন বলে জানান পাক প্রধানমন্ত্রী।
এ নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে নওয়াজ শরীফ বলেন, যে নির্দিষ্ট ব্যক্তি সমালোচনা করছেন তারা এ নিয়ে এক দশক আগে থেকেই সরব। আর আমার পরিবার অভিযোগের বাধার সম্মুখীন।
পাক প্রধানমন্ত্রী তার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ না করে আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ বিচারিক কমিশনের কাছে উপস্থাপন করতে সব রাজনীতিবিদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
নিজ পরিবারের ব্যবসা-বাণিজ্যের কথা উল্লেখ করে নওয়াজ বলেন, ‘পাকিস্তান প্রতিষ্ঠারও ২৫ বছর আগে আমার বাবা ব্যবসা শুরু করেছেন। স্বাধীনতাকালে এবং এর পরে তা সাফল্য অর্জন করেছে।
ঢাকায়ও নওয়াজ শরীফের বাবার শিল্প কারখানা গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় সেটা আর হয়নি বলেও ভাষণে উল্লেখ করেন পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী।
এরপর সৌদি আরবের মক্কায় শিল্প স্থাপনের পরিকল্পনা ছিল নওয়াজের। কিন্তু ১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে সেটা হয়নি। নওয়াজ বলেন, এর পরই তার পরিবার অন্য ব্যবসায় বিনিয়োগ করে।
তার আগে পরিবারের কেউ রাজনীতিতে ছিল না উল্লেখ করে নওয়াজ বলেন, আমার পরিবার ব্যবসায়িক পরিবার।
নথি ফাঁসের পর এক প্রতিক্রিয়ায় নওয়াজ শরীফের ছেলে হুসেন শরীফ দাবি করেছেন, বিদেশে অর্থ বিনিয়োগ করে তার পরিবার কোনো ভুল করেনি। বিদেশ থাকা সব ব্যবসাই তাদের বৈধ।
পাকিস্তানের স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রগুলো বলছে, লন্ডনে বেশ কয়েকটি বিদেশি কোম্পানির মালিক নওয়াজ পরিবারের সদস্যরা।
তবে ব্রিটেনে থাকা নওয়াজ পরিবারের ব্যবসায় এখনো অন্যায় কোনো কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসিসহ অন্য ব্রিটিশ মিডিয়া।
পাকিস্তানে নওয়াজ বিরোধী দলগুলো থেকে বলা হচ্ছে, নওয়াজ শরীফ বিপুল পরিমাণ অর্থ লন্ডনে লুকিয়ে রেখেছেন।
পৃথিবীর নানা দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে ধনী ও ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা বিভিন্ন কৌশলে কর ফাঁকি দিয়ে নিজেদের সম্পদকে গোপন করে রাখছেন। পানামার আইনি প্রতিষ্ঠান মোস্যাক ফনসেকা এমন এক কোটি ১৫ লাখ গোপন নথি ফাঁসের পর আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্রাইম অব সেঞ্চুরি’।