ভারত সরকারের গঙ্গা নদী পরিচ্ছন্নতা অভিযান ‘নমামি গঙ্গে’ থেকে ডাক পাননি তিনি। নিজ দায়িত্বেই হাতে নিয়েছেন গঙ্গা-শুদ্ধির কাজ।
কালিপদ দাস পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরের অধিবাসী। বছর তিনেক আগে মাছ ধরার কাজ ছেড়ে নদী থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য, বিশেষ করে প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। মূলত নদীতে ভেসে থাকা বা নদীর তীরে জমা হওয়া প্লাস্টিকের জিনিস সরানোর কাজ করে তিনি বর্তমানে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
৪৮ বছর বয়সী কালিদাসের দিন শুরু হয় বেলডাঙ্গার কলাবেরিয়া এলাকা থেকে। নৌকা নিয়ে তিনি এক ঘাট থেকে অন্য ঘাটে ঘুরতে থাকেন। প্রত্যেক ঘাট থেকে ভাসতে থাকা বা জমে থাকা প্লাস্টিকের বোতল কুড়িয়ে নৌকায় নিয়ে অন্য ঘাটের দিকে যান।
এভাবে ঘুরতে ঘুরতে তার দিনের সমাপ্তি ঘটে হয় ভাগীরথী ব্রিজে, নয় ফরাসডাঙ্গা ঘাটে।
নিজের এই কাজ নিয়ে বেশ গর্বিত কালিদাস। টাইমস অব ইন্ডিয়া’কে তিনি বলেন, ‘কোনো সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা এনজিও গঙ্গা থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য সরানোর কথা ভাবে না। তাই আমিই নদীর বিভিন্ন ঘাটে ঘুরে প্লাস্টিকের বোতল তুলে আনি।’
‘আমি রোজ সকালে অন্য জেলেদের সাথে নৌকা নিয়ে বের হই। তারা যখন মাছ ধরে, আমি তখন ঘুরে ঘুরে ভাসতে থাকা বোতল কুড়াই। ঘাটে থেমেও বোতল সংগ্রহ করি। এভাবে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা কাজ করে দিনে দুই কুইন্টালের মতো বোতল জমা হয়। আর সেগুলো বিক্রি করে ২৪০০ থেকে ২৬০০ রুপি পাই আমি।’
‘আমি শিক্ষিত নই। কিন্তু আমি খেয়াল করেছি, শিক্ষিত মানুষরাই প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহার করে নদীতে বা তীরে ছুড়ে ফেলে।
বহরমপুরের হাই স্কুল শিক্ষক সজল ভৌমিক বলেন, কালিপদ দাস তার কাজের মধ্য দিয়ে জনগণকে প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে সচেতন করছেন। এজন্য তাকে সম্মানিত করা জরুরি।
অন্যদিকে মুর্শিদাবাদ জেলা সভাধিপতি মোশাররফ হোসেন মণ্ডল বলেছেন, কালিপদের গল্প শুনে তারা নদী পরিচ্ছন্নতার কাজে আরও বেশ কয়েকজন জেলেকে নিয়োজিত করার পরিকল্পনা করছেন।