চলচ্চিত্র নির্মাণের সাথে একজন তরুণ কেন নিজেকে যুক্ত করছেন? চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে তিনি কীভাবে নিজেকে তৈরি করছেন? তারা কী কী প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন? চলচ্চিত্রের বিষয়, আঙ্গিক নিয়ে তাদের ভাবনা কী? নির্মাণ সহায়তা ফান্ড, চলচ্চিত্র উৎসব, বিকল্প প্রদর্শন, উচ্চতর শিক্ষা সম্পর্কে তারা কতটা অবগত? স্বাধীন এবং বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র নিয়ে তারা কে কী ভাবছেন। এরকম নানা প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে তরুণ নির্মাদের অংশ গ্রহণে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে হয়ে গেল মতবিনিময় সভা।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ‘তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মতবিনিময় সভাটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম-এর সভাপতি চলচ্চিত্র নির্মাতা জাহিদুর রহিম অঞ্জন, লিয়াকত আলী লাকী, সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকি, আকা রেজা গালিব, কেএন রাশেদসহ চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সংগঠক।
চলচ্চিত্র শিক্ষক হায়দার রিজভীর সভাপতিত্বে সভাটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম-এর সাধারণ সম্পাদক চলচ্চিত্র নির্মাতা রাকিবুল হাসান।
জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস ২০১৯ উপলক্ষ্যে তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাগণ কথা বলেন তাদের চলচ্চিত্র ভাবনা, সাফল্য, প্রতিবন্ধকতা, নির্মাণ সহায়তা ফান্ড, চলচ্চিত্র উৎসব, বিকল্প প্রদর্শন, চলচ্চিত্র শিক্ষাসহ নানা বিষয়ে।
প্রধান অতিথি মোরশেদুল ইসলাম-এর বক্তব্যে স্বল্প বাজেটে চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে উঠে আসে ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’র কথা। তিনি বলেন– আমি সেদিন ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’ দেখলাম। কী অসাধারণ ছবি! কী দারুণ ছবি! মাত্র নয় লাখ টাকায় নির্মিত ছবি আন্তর্জাতিক বাজারে পুরস্কার জিতে নিচ্ছে, সমাদৃত হচ্ছে। এটাই প্রমাণ করে স্বল্প বাজেটেও অনেক ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণ সম্ভব। তোমাদের এ বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে!’
তিনি আরও বলেন, তরুণদের সাথে আজ কথা বলতে পেরে ভালো লাগছে। সিনেমা জনপ্রিয় হচ্ছে –এটাই বাংলাদেশের সম্ভাবনার জায়গা। সিনেমা বানাতে কঠিন পথ পাড়ি দেওয়ার মনোবল থাকতে হয়।
তিনি তাঁর চলচ্চিত্র নির্মাণের গল্প, পুরনো দিনের কথা, চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলন, বিকল্প ধারা বিষয়ক ইতিহাসও তরুণদের সামনে তুলে ধরেন তাঁর বক্তব্যে।
চলচ্চিত্র নির্মাতা ও বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম-এর সভাপতি জাহিদুর রহিম অঞ্জন তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমাকে নিজেকে প্রতিদিনই তরুণদের সাথে সময় কাটাতে হয় যেহেতু শিক্ষকতার সাথে এবং সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছি সেজন্য। আমার মনে হয় সিনেমা নির্মাণে আমাদের যে প্রস্তুতি সে প্রস্তুতির এখনো বড় অভাব। একজন চলচ্চিত্র নির্মাতার সঙ্গীত-কবিতা-সাহিত্য-শিল্পের নানান দিক সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। সোস্যাল কমিটমেন্ট থাকতে হবে। দেশে আপনি নিজের সিনেমা দেখাতেই যদি না পারেন, বিদেশে দেখিয়ে কী হবে? একজন প্রকৃত শিল্পীর কাজই হল যার ভয়েস নেই তার ভয়েস দেওয়া।
ছবি: আবিদ মল্লিক