চলতি মাসের শুরুতেই একটি বইমেলায় অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী, নির্মাতা ও শিল্পী মেহের আফরোজ শাওন। সেখান থেকে সোমবার (১৬ মার্চ) দেশে ফিরেছেন তিনি। আর ফিরেই স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টাইনে গেলেন এই অভিনেত্রী।
খবরটি নিজেই ফেসবুকে জানিয়েছেন ‘কৃষ্ণপক্ষ’-এর এই নির্মাতা। করোনা ভাইরাসের প্রাথমিক লক্ষণ তার মধ্যে নেই, নিউ ইয়র্ক থেকে ফিরে তবু স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে গেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, জ্বর, কাশি, গা ব্যথা নেই। তবু আমি গতকাল (১৬ মার্চ) থেকে আমার ধানমন্ডির বাসায় সবার থেকে আলাদা (হোম কোয়ারেন্টাইন শব্দটিতে আমারও ভয় লাগে!) আছি। আমার মা’র বাড়িতে থাকা পুত্রদের সাথে ঘন্টায় ঘন্টায় ভিডিও কলে কথা হচ্ছে।
সম্প্রতি আমেরিকা যাওয়ার কারণ জানিয়ে শাওন বলেন, বেশ আগে প্রতিশ্রুতি দেয়া একটি বইমেলায় অংশ নিতে আমেরিকায় গিয়েছিলাম। ওয়াশিংটনে প্রকোপ থাকলেও নিউইয়র্কে করোনা প্রকাশ পায়নি তখনও। ভাইরাসটির সংক্রমণ বাড়ার পরপরই আমেরিকার বিভিন্ন স্টেটে সতর্ক বার্তা জারী হয়ে যায়। তারপর ঘর থেকে বের হইনি একদম। এবছর মে মাসের ৩০, ৩১ তারিখে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্মেলন ২০২০ এর সংবাদ সম্মেলন বাতিল এবং মূল অনুষ্ঠানের তারিখ স্থগিত করা হয় তৎক্ষণাৎ। প্রতি মুহূর্তের খবর দেখছিলাম আর ভাবছিলাম বাচ্চাদু’টোর কাছে ফিরতে পারবো তো? পরম করুণাময়ের অশেষ কৃপায় গতকাল (১৬ মার্চ) দেশে ফিরেছি।
দেশে ফেরার আগেই হোম কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলেন জানিয়ে শাওন আরো বলেন, ঢাকা এয়ারপোর্টে স্বাস্থ্য বিষয়ক সতর্ক অবস্থান দেখে ভালো লাগলেও দুবাই থেকে ফেরার ফ্লাইটে মধ্যপ্রাচ্যের যাত্রীদের গণহারে প্যারাসিটামল কিংবা প্যানাডল খেয়ে ‘জ্বর যেন না ওঠে তাইলে মেশিনে আটকায়ে দিবে’-ধরনের আচরণ খুব আশংকাজনক লেগেছে! ‘কোয়ারেন্টাইন’ শব্দটার প্রতি এক অজানা ভীতিতে সবাই। ‘মাত্র ১৪ টা দিন নিয়ম মেনে আলাদা থাকলে পরিবারের অন্য সদস্যরা করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের ঝুঁকিমুক্ত থাকবে’-এই কথা ৪/৫ জনকে বোঝাবার চেষ্টা করেও সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছি আমি। তবে নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলাম নিউ ইয়র্ক থেকে রওনা হওয়ার একদিন আগেই। আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলে রেখেছিলাম- তারা দুইজন সায় দিয়েছেন। নিনিত এবং নিষাদ দু’জনকেই বুঝিয়ে বলেছেন। পুত্রদ্বয়ও বিষয়টা সুন্দরভাবেই গ্রহণ করেছে।
আগামী ১৩ দিন কী কী করবেন তার তালিকা ও দিয়েছেন শাওন। সেই সঙ্গে সবাইকে ভালো থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে অন্যদের ব্যাপারেও সচেতন থাকতে।