ঈদের একটা বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। তার পাশাপাশি ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে উৎসব। আর এই আনন্দ উপভোগ করে মূলত শিশু কিশোররা। কিন্তু এতদিন ঈদ উৎসবের এই আনন্দ থেকে ছুটি বঞ্চিত বিভিন্ন দেশের মুসলমান শিশু কিশোররা। কারণ মুসলিম দেশ ছাড়া পৃথিবীর অনেক দেশেই স্কুলে ঈদের ছুটি দেওয়া হয় না।
হয়তো ঐচ্ছিক ছুটি হিসাবে তা নেওয়া যায়। কিন্তু তাতে ঈদের ছুটির অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয় না। ইত্যাদি নানান বিবেচনায় এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইর্য়ক সিটিতে স্কুলে ঈদের ছুটি দেওয়া হচ্ছে।
গত ৪ মার্চ, ২০১৫ নিউ ইর্য়কের মেয়র ডি. ব্ল্যাসিও বছরে দুই ঈদে স্কুল ছুটির এই ঘোষণা দেন। যদিও এর আগে ভারমন্ট, ম্যাসাচুস্টেস, নিউজার্সি ও মিসিগানে মিউনিসিপ্যালিটির আওতায় কিছু কিছু স্কুলে ঈদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মেট্রোপলিটান সিটি হিসাবে এই প্রথম নিউ ইর্য়কের সব স্কুলে ঈদের ছুটি দেওয়া হচ্ছে।
ঈদের দিন হিসাবে এ বছর আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরকে স্কুল ছুটির তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। যদিও ছুটি ঘোষণার সময় সামনে ঈদ উল ফিতরের ছুটি ছিলো। কিন্তু ঈদ উল ফিতরের ছুটি গ্রীষ্মকালীন ছুটির মধ্যে পড়ে যাওয়ার কারণে তখন আর আলাদা করে সেই ঈদের ছুটির ঘোষণা দেয়া হয় নি।
২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঈদ উল ফিতর এবং ঈদ উল আযহার ছুটিকে সার্বজনীন স্কুল ছুটি হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
নিউ ইয়র্কে ১০ লাখ মুসলমান বসবাস করে যার মধ্যে ভোটার ১লাখ ৫ হাজার। ২০০৯ সালে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে নিউ ইয়র্কে পাবলিক স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে শতকরা ১০ ভাগ মুসলমান।
এর আগে নিউ ইয়র্কে অন্য ধর্মালম্বী বিশেষ করে খৃষ্টানদের ইস্টার, ক্রিসমাস, গুড ফ্রাইডে এবং ইহুদীদের রোস হাসানাহ, ইয়ম কপ্পুর উপলক্ষে ছুটি দেওয়া হলেও মুসলমানদের কোনো ছুটি ছিল না।
নিউ ইয়র্কের মেয়র ডি. ব্ল্যাসিও বলেন, এই শহর গঠন এবং উন্নয়নে মুসলমানদের ভূমিকা রয়েছে, তাদের অবদানকে মূল্যায়ন ও তাদের ধর্মীয় অধিকার প্রতিষ্ঠা ও মর্যাদা দেওয়ার লক্ষ্যেই এই ছুটিকে স্কুলের সার্বজনীন ছুটি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে স্কুল চ্যান্সেলর কারমেট ফারিনা বলেন, অন্য ধর্মের ছুটির সাথে মুসলমানদের ছুটি অর্ন্তভূক্ত হওয়ায় ধর্মের বিষয়ে অন্য ধর্মের প্রতি পারস্পরিক সহনশীলতা, শ্রদ্ধাবোধ ও সৌর্হাদ্য বাড়বে।
এই ছুটি আদায়ে নিউ ইয়র্কের মুসলিম সংগঠনের একটা ভূমিকা রয়েছে। তবে এখনো নিউ ইর্য়কে ঈদের ছুটিকে সাধারণ ছুটি হিসেবে না থাকলেও স্কুল ছুটিতেই আপাতত খুশি নিউ ইয়র্কের মুসলমানরা। বিশেষ করে উৎসব পাগল বাংলাদেশীদের মধ্যে ঈদের আমেজ এবার ভিন্নভাবে ধরা দেবে বলে মনে করছেন সেখানকার বাংলাদেশীরা।