নিউজিল্যন্ডের মসজিদে গত বছর হামলা চালিয়ে ৫১ জনকে হত্যাকারী অস্ট্রেলিয়ান যত বেশি সম্ভব মানুষকে হত্যা করতে চেয়েছিল বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
শোকসন্তপ্ত পরিবার ও আহতদের সামনে এক শুনানিতে আদালতকে বলা হয়, যতজনকে ব্রেনটন ট্যারেন্ট হত্যা করতে পেরেছে তার থেকে অনেক বেশি জনকে সে হত্যা করতে চেয়েছিল।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে লাইভ করে কিভাবে অস্ত্র খুলে নারী, পুরুষ ও শিশুদের হত্যা করেছে, কোনো প্রাণভিক্ষার আবেদনে সে গুরুত্ব দেয়নি এবং এক মসজিদ থেকে আরেক মসজিদে যাওয়ার সময় লাশের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে গেছে তাও আদালতকে জানানো হয়।
প্রসিকিউটর আদালতকে জানান, যখন তিন বছরের একটা শিশু তার বাবার পা আঁকড়ে ধরেছিল, ট্যারেন্ট তার দিকে দুটি নির্দিষ্ট গুলি ছোঁড়ে।
গত বছরের মার্চে দুটি মসজিদে হামলার ঘটনায় ট্যারেন্ট ৫১টি হত্যার অভিযোগ, ৪০টি হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ও একটি সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে অভিযুক্ত।
আইনজীবীদের আশা, ২৯ বছর বয়সী ট্যারেন্টই প্রথম ব্যক্তি হবেন যিনি নিউজিল্যান্ডে প্যারোল ছাড়াই যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা পাবে।
ক্রাইস্টচার্চ থেকে প্রায় এক ঘণ্টা দক্ষিণে অ্যাশবার্টনের তৃতীয় মসজিদে হামলা চালানোর সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রসিকিউটর বলেন, মসজিদগুলোতে গিয়ে যতটা সম্ভব মানুষ হত্যা করার ইচ্ছা ছিলো বলেই পুলিশকে জানিয়েছে ট্যারেন্ট। অ্যাশবার্টনে আরেকটি হামলা চালাতেই সে যাচ্ছিল কিন্তু পথেই তাকে আটকানো হয়। তবে তার আক্রমণকে সন্ত্রাসী আক্রমণ বলার বিরোধিতা করে সে।
তার মতে, এই হামলা তার আদর্শিক বিশ্বাস দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং সে মুসলিম জনসংখ্যা বা সাধারণভাবে অ-ইউরোপীয় অভিবাসীসহ ‘আক্রমণকারী’ হিসাবে অভিহিত ব্যক্তিদের মধ্যে ভয় জাগিয়ে তুলতে চেয়েছিলো।
আদালতকে জানানো হয়, ট্যারেন্ট ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডে আসে। ক্রাইস্টচার্চ থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে ডুনেডিনে অবস্থান করছিলো। সেখানে সে উচ্চশক্তি চালিত আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করে এবং ৭০০০ রাউন্ড গোলাবারুদ কিনে। সামরিক ধাঁচের ব্যালিস্টিক বর্ম এবং কৌশলগত ভ্যাসেটও কিনে সে।
হামলার দু’মাস আগে ট্যারেন্ট ক্রাইস্টচার্চ চলে যায় এবং আল নূর মসজিদের উপরে ড্রোন চালিয়ে প্রবেশদ্বার ও প্রস্থানসহ মাঠ এবং ভবনগুলি চিত্রিত করেন এবং মসজিদের মধ্যে ভ্রমণ সম্পর্কে বিস্তারিত নোট তৈরি করে।
হাউস বলেন, মসজিদগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতিই সে নিয়েছিলো। ২০১৯ সালের ১৫ই মার্চ আল নূর মসজিদে ঝড় তোলার পরপরই ৭৪ পৃষ্ঠার একটি ইশতেহার সে উগ্রবাদী ওয়েবসাইটগুলোতে পাঠায়, পরিবারকে জানায় কী করতে যাচ্ছে এবং সংবাদমাধ্যমেও ইমেইল পাঠায়।