প্রতিদিন খবরের পাতায় খুললেই চোখে পড়ে নারী নির্যাতনের খবর। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হল – ধর্ষণ,গণধর্ষণ। এ ঘটনায় রেহাই পাচ্ছে না শিশু কন্যা থেকে শুরু করে প্রাপ্ত বয়স্ক নারী। দেশে বিদেশে এ নির্যাতনের চিত্র নিত্যদিনের ঘটনা। পরিবার সমাজ কোথাও নারী পাচ্ছে না তার সার্বিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। এমনকি নানা ধরনের কলহের জের ধরে নারীর উপর চলে ধর্ষণের মত পাশবিক নির্যাতন। নারী নির্যাতনের পৈশাচিকতা পুরুষের বিকৃত যৌন চিন্তার যে বহিঃপ্রকাশ তাতে কোন সন্দেহ নাই। এমন হীনরুচির মানুষের কাছে মানবতার বিবেকবোধ পরাজিত হচ্ছে দিনের পর দিন। আর সে কারণে আইন অনুশাসন বা বিধি বিধান দিয়ে বন্ধ করা যাচ্ছে না ধর্ষণ, গণধর্ষণের মত ঘটনাকে।
ধর্ষণের মামলার আইনগত প্রক্রিয়ায় সাজা পাওয়ার পূর্বের ধাপগুলোর দুর্বলতার কারণে ধর্ষণের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। শাস্তির দৃষ্টান্ত নগণ্য। বস্তুত এ বিষয়টিতে সমস্যা হল, মানসিক চিন্তা চেতনার অভাব । একজন মানুষ যখন তার কুরিপুকে অবদমন করতে না পারে, তখন সে অমানুষে পরিণত হয়। হিতাহিত জ্ঞানশূন্য বিবেকহীন অমানুষ হয় বলেই পিতা কন্যাকে, চলন্ত বাসে প্রতিবন্ধী শিশুকে কিংবা মা বোনদের সামনে আরেক মেয়ে, বোনের উপর অত্যাচার চালায় সংঘবদ্ধভাবে। কখনও আবার অপরাধ লুকাতে নির্যাতিতাকে করে হত্যা।
ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন আইন করার পাশাপাশি সবচেয়ে জরুরী এখন জন সচেতনতা তৈরি করা। একক বা সংঘবদ্ধভাবে নারীকে ভোগ করে যে হিংস্রতা প্রকাশ করে তা অনাচার অন্যায় এটা বুঝাতে হবে সকল শ্রেণীর মানুষকে। সমাজের বিবেক যদি পরাজিত হয় তখন রাষ্ট্র জীবনে অগ্রসরতা বাধাপ্রাপ্ত হয়।
আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনাতে নারী পুরুষ ঘরে- বাইরে তাদের শ্রম-মেধা দিয়ে নিজেদের ভূমিকা রাখছে সমানতালে। আর এ অবস্থায় নারী যদি তার জীবন, শ্লীলতা,সম্ভ্রম নিয়ে শঙ্কিত হয় তাহলে এর দায় নিতে হবে দেশ জাতিকে।
মানুষরূপী অমানুষের কুরিপুর কাছে নারীর সম্ভ্রমের বলিদান অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। সুতরাং এ অবস্থায় মনুষ্যত্বর বিবেকবোধের পরাজয়কে মেনে নেয়া হবে আত্মঘাতীর সামিল। যা আগামী দিনে নারীদের চলার পথকে করবে অবরুদ্ধ।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)