নারীদের সুরক্ষার জন্য করা একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে তুরস্ককে প্রত্যাহার করেছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। শনিবার ভোরে জারি করা রাষ্ট্রপতির একটি ডিক্রির মাধ্যমে তিনি এই চুক্তি থেকে সরে আসেন।
এই ঘটনা পুরো দেশকে হতভম্ব করেছে। বর্তমানে তুরস্ক উচ্চ পর্যায়ের ঘরোয়া সহিংসতা ও নারীদের হত্যার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে।
২০১১ সালে প্রথম দেশ হিসেবে তুরস্কই ইউরোপ কনভেনশন কাউন্সিলে স্বাক্ষর করে যেটা নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং ঘরোয়া সহিংসতা রুখতে করা হয়েছিল। তুরস্কের সবচেয়ে বড় শহর ইস্তাম্বুলের নামে সেটার নাম রাখা হয়েছিল ইস্তাম্বুল কনভেনশন।
এরদোগান কেন এই চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিলেন সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে তুরস্কের নারী অধিকার রক্ষীরা এই সরে আসার সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে, কিছু রক্ষণশীলদের যুক্তি এতে ঐতিহ্যবাহী পারিবারিক মূল্যবোধ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এই চুক্তি নিয়ে জনবিতর্ক শুরু হয় আগস্টে, যখন ধর্মীয় ও রক্ষণশীল দলগুলো এই সম্মেলন পারিবারিক মূল্যবোধকে হ্রাস করছে এবং এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের পক্ষে ওকালতি করছে উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে তীব্র তদবিরের প্রচেষ্টা শুরু করে।
তবে এরদোগানের মন্ত্রিসভা নিশ্চিত করেছে যে, এই চুক্তি থেকে সরে আসার মানে ঘরোয়া সহিংসতা এবং নারীদের অধিকার নিয়ে নিয়মকানুন থেকে পিছিয়ে আসা নয়।
দেশিটির ফ্যামিলি অ্যান্ড সোশ্যাল পলিসি মিনিস্টার জেহরা জুমরুট সেলসুক টুইটারে বলেন: আমাদের বর্তমান আইন ও বিশেষ করে সংবিধানে এখনও নারী অধিকার নিয়ে আমাদের নিশ্চয়তা থাকছে। আমাদের বিচার ব্যাবস্থা যথেষ্ট গতিশীল ও শক্তিশালী, যেন প্রয়োজন হলেই নতুন আইন প্রচলন করা যায়।
নারীদের দলের একটি জোট বলেছে: প্রেসিডেন্সিয়াল ডিক্রির মাধ্যমে এই কনভেনশন থেকে বেরিয়ে যাওয়া দু:স্বপ্নের মতো, আর এভাবে এই সম্মেলন থেকে সরে এসে সরকার ঘোষণা দিয়ে দিলো যে তারা আর নারীদের সহিংসতা থেকে রক্ষা করবে না। এতে করে হত্যা, অপব্যবহারকারী ও ধর্ষকরা আরও শক্তিশালী হবে।
সহিংসতার কারণে নারী মৃত্যুর আলাদা কোনো তথ্য নেই তুরস্ক সরকারের কাছে। কিন্তু বেসরকারি একটি নারী অধিকার দলের মতে, ২০২১ সালেই তুরস্কে নির্যাতনে ৭৮ জন নারী মৃত্যুবরণ করেছে।