নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলার পেপারবুক প্রস্তুত সম্পন্ন হয়েছে। বিজি প্রেস থেকে চলতি সপ্তাহে এই পেপারবুক সুপ্রিমকোর্টে এসে পৌঁছাবে। তাই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়মিত ও জেল আপিল এবং ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হাইকোর্টে শিগগিরই শুরু হচ্ছে।
হাইকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মো. সাব্বির ফয়েজ জানান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, পেপারবুক প্রস্তুত হওয়ার প্রেক্ষিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলাটি শুনানি করার ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকছে না। মামলাটি এখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির জন্য এর নথি প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করা হবে। প্রধান বিচারপতি অনুমোদন দিয়ে হাইকোর্টে যে বেঞ্চে পাঠাবেন সেখানেই এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
সাত খুন মামলায় নিম্ন আদালতের মৃত্যুদণ্ডের রায় অনুমোদনের জন্য নথি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। এছাড়াও এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামির নিয়মিত ও জেল আপিল শুনানির জন্য গত ৮ ফেব্রুয়ারি গ্রহণ করে হাইকোর্ট।
এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে নূর হোসেন, তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন, মাসুদ রানা, এমদাদুল হক (হাবিলদার), বেলাল হোসেন, আবু তৈয়ব, শিহাব উদ্দিন, এসআই সুনেন্দু বালা, পূর্ণেন্দু বালা, আসাদুজ্জামানূর, মূর্তজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান বিপু, আবুল বাশার ও রহম আলী হাইকোর্টে নিয়মিত আপিল ও জেল আপিল দায়ের করেছেন।
সাত খুনের মামলায় গত ১৬ জানুয়ারি সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন ও র্যাবের বরখাস্তকৃত তিন কর্মকর্তাসহ ২৬ জনকে মৃত্যৃদণ্ড দিয়ে নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন রায় দেন।
এ মামলার ৩৫ জন আসামির মধ্যে বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত ৩৫ আসামির মধ্যে ১১ জন এখনো পলাতক।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন।
এর তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ। পরদিন মেলে আরেকটি লাশ। নিহত অন্যরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।
ঘটনার এক দিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন।