সম্প্রতি ভারতে ম্যাগি নুডুলসে বিপজ্জনক মাত্রার সীসা পাওয়ার পর এর প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নেসলে ইন্ডিয়াকে বাজার থেকে ম্যাগির সব ধরণের নুডুলস সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন উত্তর প্রদেশের একটি আদালত।
ম্যাগির এই নুডুলস বিতর্ক খাদ্য বাজারে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। ভারতের বাজারে এখনই যে ব্যবসায়ীরা ম্যাগি নুডুলস বিক্রি করা বন্ধ করেছেন তা নয়। তবে অনেক ক্রেতা কঠিন হৃদয়ে এই নুডুলসটি কেনা থেকে বিরত থাকছেন।
ভারতে খাদ্য নিয়ে বিতর্কের ঘটনা এই প্রথম নয়।
এর আগে আরো কয়েকটি কোম্পানির খাদ্যে ভেজাল পাওয়া যায়। বিভিন্ন সময়ে বড় এবং নামী দামী ব্যান্ডকেই এই বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে। এমন কয়েকটি ব্র্যান্ডকে নিয়ে তৈরি বিতর্ক তুলে ধরা হলো।
লোভনীয় ডেইরি মিল্ক
ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে বুড়ো; সকলের কাছেই চকলেট একটি লোভনীয় বস্তু। আর ডেইরি মিল্কের একেকটি খণ্ড মুখে পুড়লে মনে হয় যেনো শৈশবের দিনগুলোতে ফিরে যাওয়া। অথচ এই ডেইরি মিল্কের চকলেট নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিলো ভারতের মহারাষ্ট্রে।
২০০৩ সালে ক্যাডবেরি ডেইরি মিল্কের বারে পোকা পাওয়া গেলে এর ক্রেতা এবং বিক্রেতারা একসাথে আন্দোলন শুরু করেন। ক্যাডবেরি তখন বলেছিলো, তাদের চকলেটে পোকা পাওয়ার বিষয়টি উৎপাদন প্রক্রিয়ার ত্রুটির হতে পারে না। হয়তো ত্রুটিপূর্ণ গুদামজাত ব্যবস্থার কারণে হয়েছে।
তখন মহারাষ্ট্রের ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন কমিশনার বলেছিলেন, এটা ধরে নেওয়া হচ্ছে যে, স্টোরেজে ক্রটির কারণে এই পোকা জন্মেছে। তাহলে প্যাকেজিংটা কেমনভাবে করা হয়েছিলো? নিশ্চয়ই এতে ত্রুটি ছিলো; নইলে উৎপাদনের সময়েই এটা ঘটেছে।
ম্যাকডোনাল্ড
অভিজাত এই ব্র্যান্ডটির নাম কে শোনেননি? এই ম্যাকডোনাল্ডেরই ‘হ্যাপি মিল’ এ একসময় পাওয়া যাচ্ছিলো মরা ইঁদুর, মানুষের দাঁত এবং দাতব্য জিনিসসহ আরো অনেক কিছু। তবে চীনে এই ব্র্যান্ডের খাবারে বিতর্ক তৈরির পর বিশ্বে এর পণ্যের বিক্রি কমে যায়। অনেক টাকা জরিমানাও গুণতে হয় তাদের।
কেএফসি
ভারতে কেএফসির খাবার নিয়েও বিতর্ক হয়েছে। অভিযোগ করা হয় কেএফসির ‘রিজ্জো রাইস’ এ কৃত্রিম রঙ মেশানো হচ্ছে। তবে এই অভিযোগকে মিথ্যা এবং গুজব বলে উড়িয়ে দেয় কেএফসি।
কোকা কোলা
১৯৭৭ সালে ভারত সরকার কোকা কোলার কাছে কোকের ‘গোপন রেসিপি’ কী তা জানতে চাইলে কোম্পানিটি ভারত থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয়।পরে অবশ্য ১৯৯৩ সালে ভারতে আবারো তারা ব্যবসা শুরু করে।
কোকা কোলার বিরুদ্ধে কীঁটনাশক ব্যবহারের অভিযোগ মামলা করা হয় ২০০৬ সালে। ভারতের রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে এই কোম্পানির বিরুদ্ধে কোলায় মাত্রার চেয়ে ২৪ গুণ বেশি কীঁটনাশক ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়।
সাবওয়ে
২০১১ সালে ভারতের বিখ্যাত সাবওয়ের চিকেন টিক্কার ভেতরে পোকা পান এক নারী। সাবওয়ের ওই ব্রাঞ্চের ম্যানেজার এর জন্য দোষারোপ করেন সবজিওয়ালাকে। সবজির ভেতরে পোকা থাকায় এটা হয়েছে বলে চালিয়ে দেন তিনি।
কিন্তু দায়িত্ব তো এড়ানো যায় না। কারণ সবজিতে পোকা থাকলে তা রান্নার আগে বাছাই করার দায়িত্ব তাদেরই। একই ঘটনা ঘটে ভারতের হায়দরাবাদে ২০১৪ সালে। সেখানে একজন ব্যক্তি সাবওয়ের একটি নন-ভেজিটারিয়ান হটডগের মধ্যে পোকা পান।