স্বামীর আদেশে তার দুই কর্মচারীর সামনে নাচতে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীকে নগ্ন করে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে স্বামীসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে লাহোর পুলিশ।
পাকিস্তানের লাহোরে ডিফেন্স হাউজিং অথরিটি’র একটি আবাসিক ভবনে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে পাঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে।
এ বিষয়ে গত ২৬ মার্চ দায়ের করা প্রাথমিক অভিযোগ বা এফআইআর-এ বলা হয়েছে, আসমা আজিজের স্বামী তার এবং তার দুই কর্মচারীর সামনে স্ত্রীকে নেচে দেখাতে বলেছিলেন। আসমা তাতে রাজি না হওয়ায় কর্মচারীদের সামনেই স্ত্রীকে মারধর করতে শুরু করেন তিনি। এই নির্যাতনের কাজে সাহায্য করেছিল সঙ্গের দু’জনও।
ডন জানিয়েছে, এ ঘটনায় কাহনা পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশ অভিযোগ না নিলে আসমা একটি ভিডিওবার্তা জনপ্রিয় সোশ্যাল মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যেটি বর্তমানে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ভিডিওবার্তায় আসমা অভিযোগ করেন, চার বছরের দাম্পত্য জীবনে স্বামী তাকে সবসময়ই অনেক মারধর করে এসেছে। ‘কিন্তু এবার তো সে আমার চুলও ন্যাড়া করে দিয়েছে। আমার মাথা ঠুকে ঠুকে মেরেছে সে।’
তিনি বলেন, ‘সে তার কর্মচারীদের সামনে আমার পোশাক খুলে ফেলল। ওই কর্মচারীরা আমাকে ধরে রেখেছিল, তখন সে আমার মাথা কামিয়ে চুলগুলো পুড়িয়ে দিলো। আমার পোশাক রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল। তখন আমাকে একটা পাইপ দিয়ে বেঁধে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারল। সে আমাকে হুমকি দিয়েছিল নগ্ন করে ঝুলিয়ে রেখে দেবে।’
আসমার অভিযোগ, এ ঘটনার পর কাহনা পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করতে গেলে তাকে এফআইআর নম্বর না দিয়ে বা শারীরিক পরীক্ষার ব্যবস্থা না করে উল্টো তার কাছে টাকা চেয়েছে পুলিশ। ‘আমি যে অবস্থায় বাসা থেকে বের হয়েছিলাম, আমার পায়ে জুতাও ছিল না। তাদেরকে টাকা কোত্থেকে দেবো আমি?’ বলেন তিনি।
আসমা জনগণের কাছে সাহায্য চেয়ে বলেন, তার বাবা-মা দু’জনেই মৃত। তার এখন আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। তার কাছে কোনো খাবারও নেই।
عاصمہ عزیز لاہور کی رہائشی شوہر نے بدترین تشدد کیا جب تھانے گئ تو پولیس والے پیسے مانگتے رہے #شرمناک pic.twitter.com/8alHwjxwG7
— Javeria Siddique (@javerias) March 27, 2019
আসমা আজিজের ভিডিওবার্তায় এসব অভিযোগ সুপারিনটেন্ডেন্ট মডেল টাউন মুহাম্মদ আলী ওয়াসিম মডেল টাউনের ডিএসপি’কে নির্দেশ দেন অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে তাকে এ ব্যাপারে রিপোর্ট দিতে।
এরপর কাহনা পুলিশ স্টেশনের তদন্ত প্রধান সেলিম শওকত ডন নিউজ টিভিকে জানান, ইতোমধ্যে আসমার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার স্বামী এবং দুই কর্মচারীর একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।
এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্তের আদেশ দিয়েছেন পাঞ্জাব পুলিশের আইজি আমজাদ জাভেদ সেলিমি। তিনি ডিআইজি (তদন্ত) ড. ইনাম ওয়াহিদকে নিজে অভিযোগগুলো তদন্ত করতে এবং দোষীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।