নাইজেরিয়ায় একটি স্কুলে বোকো হারামের হামলার পর থেকে নিখোঁজ শতাধিক ছাত্রীর সন্ধানে অতিরিক্ত বাহিনী মাঠে নামিয়েছে দেশটির সরকার।
প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি এ ঘটনাকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ উল্লেখ করে নিখোঁজ মেয়েদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং দ্রুত উদ্ধারের আশ্বাস দিয়েছেন। এ উদ্দেশ্যে আরও বেশি স্থলবাহিনীর সদস্য এবং সামরিক বিমান উদ্ধার অভিযানে যোগ করা হয়েছে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম নাইজেরিয়ার ইয়োবে প্রদেশের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত দাপচি শহরের একটি স্কুলে আচমকা হামলা চালায়। তারপর থেকেই ওই স্কুলের ১১০ জন ছাত্রীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আশঙ্কা করা হচ্ছে বোকো হারামের সদস্যরা তাদের ধরে নিয়ে গেছে।
গত সোমবার গভর্নমেন্ট গার্লস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনিক্যাল কলেজে ওই অতর্কিতে হামলায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই ভয় পেয়ে এদিক-ওদিক ছুটে পালাতে শুরু করে। হামলা শুরুর বেশ কিছু সময় নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী ও সামরিক বিমান ঘটনাস্থলে এসে হামলা প্রতিহত করতে শুরু করে।
পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর থেকেই শতাধিক ছাত্রীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সরকার প্রাথমিকভাবে অপহরণের বিষয়টি অস্বীকার করে দাবি করে, মেয়েগুলো হয়তো হামলাকারীদের কাছ থেকে বাঁচার জন্য লুকিয়ে রয়েছে। কিন্তু পরে ১১০ জন স্কুলছাত্রীর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নেয়।
সাম্প্রতিক এ ঘটনায় ২০১৪ সালে বোর্নো প্রদেশের চিবক শহরে বোকো হারামের হাতে ২৭৬ স্কুলছাত্রী অপহরণের ভয়াবহ স্মৃতি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে নাইজেরীয়দের মনে।
দাপচির এ ঘটনায় ছাত্রীদের বাবামায়ের মধ্যে দিন দিন ক্ষোভ বাড়ছেই। তাদের অভিযোগ, গত মাসে দাপচির বিভিন্ন প্রধান চেকপয়েন্ট থেকে সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আর এরপরই ঘটল এ ঘটনা।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, বিশেষ করে পাশ্চাত্যের শিক্ষার পুরোপুরি বিরোধী জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম। এছাড়া নারী শিক্ষাও নিষিদ্ধ বলেও দাবি করে তারা। এ কারণেই দলটি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় এবং নারী শিক্ষার্থীদের অপহরণ করে নিয়ে যায়।