চীনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গত বছর কিছু অংশ ধসে পড়া নর্থ কোরিয়ার পুঙ্গি-রি পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র এখন অস্থিতিশীল ও বিপজ্জনক অবস্থায় আছে। সুতরাং সেটা এখন আর ব্যবহার করা নিরাপদ নয়।
২০০৬ সাল থেকে পুঙ্গি-রিতে ৬টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো হয়েছে। ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠ পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষাটি চালিয়েছিল নর্থ কোরিয়া।
ওই সময় একশ’ কিলোটন ওজনের বিশাল একটি বোমা পরীক্ষা করা হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে বোমাটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমায় বিস্ফোরিত পারমাণবিক বোমার চেয়ে সাতগুণ বেশি শক্তিশালী।
বিস্ফোরণে সাউথ কোরিয়াসহ আশপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে। সে সময় পুরো এলাকায় ৬.৩ মাত্রার ভূ-কম্পনের সৃষ্টি হয়।
এর একটু পরই ৪.৬ মাত্রার আরেকটি কম্পনের দাবি করে চীনের ভূমিকম্প বিষয়ক প্রশাসন। প্রথম কম্পনকে ‘সম্ভাব্য বিস্ফোরণ’ উল্লেখ করে দ্বিতীয়টিকে বিস্ফোরণ পরবর্তী বড় ‘ধস’ বলে বর্ণনা করে তারা।
ষষ্ঠ পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার কাছাকাছি সময়েই সেই পুঙ্গি-রি পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্রে মারাত্মক ধসে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানায়, পর্বতসারির ভেতর নির্মিত ওই পারমাণবিক মিসাইল পরীক্ষা কেন্দ্রের একটি নির্মাণাধীন অসমাপ্ত সুড়ঙ্গ হঠাৎ ভেঙে পড়লে ঘটনাস্থলেই সেখানে কর্মরত একশ’র মতো মানুষ মারা যায়।
ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়াদের বাঁচানোর চেষ্টা করতে গিয়ে দ্বিতীয় দফায় সুড়ঙ্গের বাকি অংশ ধসে পড়ে মারা যায় আরও শতাধিক কর্মী।
এর মাসদুয়েক পর, ৩১ অক্টোবর ধসের খবরটি প্রথম প্রচার করে জাপানি টিভি আসাহি। তবে ঠিক কখন সুড়ঙ্গটি ধসে পড়েছিল তা তখন নিশ্চিত করতে পারেনি সেই টিভি চ্যানেল।
সাম্প্রতিক গবেষণার মধ্য দিয়ে ধসের সময় নিশ্চিত করেছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।
ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অব চায়না (ইউএসটিসি)-এর পক্ষ থেকে পরিচালিত গবেষণাটি কিছুদিনের মধ্যেই আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়ন-এর ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’ জার্নালে প্রকাশিত হবে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বরের পরীক্ষাটির সাড়ে ৮ মিনিট পর পরীক্ষা কেন্দ্রের ওই সুড়ঙ্গ ও তার কাছাকাছি অংশগুলোতে ‘প্রায় খাড়া ধস’ নামে।
৩ সেপ্টেম্বরের পরীক্ষাটি পার্বত্য অঞ্চলে নির্মিত ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের স্থাপনাকে অনেক বেশি নড়বড়ে করে দিয়েছিল বলে আগেই ধারণা করা হয়েছিল। বিদেশি বিশেষজ্ঞরা তাই আগে থেকেই এমন একটি ধসের আশঙ্কা করছিলেন।