চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

নরসিংদীতে ৭ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ

সুমন রায়, নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর পলাশে চাঞ্চল্যকর সামসুল হক হত্যা মামলায় একই পরিবারের চার জনসহ ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে নরসিংদী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে বিচারক মৃত্যু হওয়ার আগ পর্যন্ত আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার কথা উল্লেখ করেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলো: মহব্বত আলী মুন্সির ছেলে আব্দুল গাফফার, সিরাজ মিয়ার ছেলে মারফত আলী, মইজ উদ্দিনের ছেলে আলেক মিয়া ও তার সহধর্মিনী মোছা. রুপবান, তার ছেলে শরীফ মিয়া ও আরিফ মিয়া, মুল্লুক চাঁনের ছেলে তোতা মিয়া। এরা সবাই পলাশ উপজেলার গালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা।

এছাড়া সামসুল হকের ছেলেকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার অপরাধে ৫ জনকে সশ্রম কারাদন্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় ১৩ জন আসামিকে বেকসুর খালাশ দেন আদালত।

নিহত সামসুল হক পলাশ উপজেলার গালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। কাঠমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নিহত সামসুল হকের প্রতিবেশী আলেক মিয়া ও গাফফারদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এনিয়ে উভয় পক্ষ মামলা পাল্টা মামলা দায়ের করে। এরই জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন সামসুল হককে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল। ২০০৯ সালের ৩১ আগস্ট রাতে সামসুল হকের ছেলে জহিরুল ইসলাম বাড়ি ফিরছিল।

বাড়ির অদূরে পথিমধ্যে আসামি মারফত, শরীফ ও আরিফ জহিরুলকে মারপিট করতে থাকে। তার চিৎকারে বাবা সামসুল হক এগিয়ে যায়। ওই সময় আসামিরা বাবা ছেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারী কোপাতে থাকে । তাদের উপর্যপুরি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিতের পর তাদের পার্শ্ববর্তী একটি গর্তে ফেলে রাখে।

খবর পেয়ে নিহতের স্বজন ও আশপাশের লোকজন সামসুলকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। সঙ্গাহীন অবস্থায় পড়ে থাকে জহিরুল। পরে তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সামসুলকে মৃত ঘোষণা করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় জহিরুলকে ঢাকায় পাঠানো করে। এক মাস পর তার জ্ঞান ফেরে।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নূরজাহান বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত নামা আরো কয়েকজনকে আসামি করে পলাশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পলাশ থানা পুলিশ আদালতে ২২জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে।

উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক ও সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে অভিযুক্ত সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় সোমবার দুপুরে বিচারক উক্ত আদেশ দেন।

নিহতের ছেলে জহিরুলকে কুপিয়ে জখম করার অপরাধে আব্দুল গাফফার, শরীফ মিয়া, আরিফ মিয়া, আলেক মিয়া, ফারুক মিয়া ও বাছির মিয়াকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে। এদের বাড়িও পলাশ উপজেলার গালিমপুর গ্রামে।

এই রায়ে নিহত সামসুলের ভাই ও রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।