নব গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অপর চার কমিশনারকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের প্রস্তাবিত নাম বাদ পড়লেও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠিত হওয়ায় আমরা সস্তুষ্ট। গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নব গঠিত নির্বাচন কমিশনকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছে এবং নির্বাচন কমিশনের সকল কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছে। এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে প্রকাশ করেন।
সংবিধানের আলোকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন’-২০২২ প্রণিত হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবেন এটাই জনগণের প্রত্যাশা। আমরা আশা করি, নব গঠিত নির্বাচন কমিশনের সম্মানিত সদস্যগণ তাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন। দেশের মানুষ যাতে ভোটের মাধ্যমে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারে সে বিষয়টি সুনিশ্চিত করবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু রাজনৈতিক ফায়দার জন্য এই কমিশনকে নিয়ে কোনো প্রকার অযৌক্তিক ও বিতর্কিত মন্তব্যের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত না হয়ে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। চলমান গণতান্ত্রিক ধারবাহিকতা বজায় রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই কমিশন অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে সক্ষম হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
শেখ হাসিনা গণতন্ত্র ও সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে জাতির অভিভাবক হিসেবে নির্বাচন কমিশন আইন করেছেন এবং বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলসমূহ গণতন্ত্রের রীতিনীতি অনুসরণ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির মাধ্যমে সংবিধান অনুযায়ী আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গঠিত নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এই কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচনসমূহ যাতে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় সেজন্য রাজনৈতিক দলসমূহকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে অন্যান্য সকল রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজ সাধুবাদ জানালেও বিএনপি নেতারা নির্বাচন কমিশন নিয়ে চিরাচরিতভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নেতিবাচক ও বিভ্রান্তকর বক্তব্য অব্যাহত রেখেছেন। বিএনপি নেতারা বলছেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে তাদের কোন আগ্রহ নেই, তারা এটি মানেন না। প্রকৃতপক্ষে বিএনপি’র প্রতি দেশের জনগণের কোনো প্রকার আগ্রহ নেই এবং তারা সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন ও হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের জনগণ তাদেরকে বার বার প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএনপিকে এদেশের জনগণ কেন ভোট দেবে? তাদের নেতা কে? দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী কি প্রধানমন্ত্রী হতে পারে? তাদের প্রধান দুই নেতা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী। বিএনপি বার বার দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। সংবিধানকে হত্যা করেছে। গণতন্ত্রের রীতিনীতিকে লঙ্ঘন করেছে। সংবিধানকে বার বার ভূলুণ্ঠিত করে অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখল করেছে। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং গণ রায়কে উপেক্ষা করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য বার বার ষড়যন্ত্র করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি তাদের মজ্জাগত অভ্যাস অনুযায়ী পুনরায় রাষ্ট্র ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য উন্মাদ ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্র ক্ষমতার জন্য বিএনপি এতই মরিয়া হয়ে উঠেছে যে, জনগণ কর্তৃক বারবার ধিকৃত হওয়ার পর তারা এখন বিদেশি প্রভুদের উপর ভর করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে চায়’।