আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে কারো পক্ষে বাংলাদেশকে নিয়ে খেলা করা সহজ নয়। আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে দেয়া ভাষণে নিজের জীবদ্দশায় অন্য নেতৃত্ব বেছে নেয়ার আহ্বান জানালে কাউন্সিলররা আপত্তি প্রকাশ করেন।
আওয়ামী লীগের ২০ তম জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকেই কাউন্সিলররা দীর্ঘ সাড়িতে দাঁড়িয়ে মিলনায়তনে প্রবেশ করেন। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আসেন সকাল সাড়ে নয়টার দিকে। কাউন্সিল অধিবেশন কাউন্সিলর ছাড়া কেউ নয় এমনকি গণমাধ্যমের প্রবেশ ও সংরক্ষিত করা হয়।
অধিবেশনে দলীয় সভাপতির ভাষণে নিজের বিকল্প নেতৃত্ব খুঁজতে কাউন্সিলরদের অনুুরোধ জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “আমি ৩৫ বছর ধরে এ দলের সভাপতি। এত লম্বা সময় কেউ সভাপতি থাকে না। আমি চাই আমি জীবিত থাকতেই আপনারা নতুন নেতা নির্বাচন করে এই সংগঠনকে আরও গতিশীল করার চেষ্টা করবেন।”
ওই সময় উপস্থিত কাউন্সিলররা চিৎকার করে আপত্তি প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের শান্ত করার জন্য বলেন, “এখনই তো নির্বাচন হচ্ছে না। এসব পরে বলুন। কিন্তু এটা করতে হবে। আমার বয়স ৭০ বছর হয়ে গেছে। অনেক বৃদ্ধ হয়ে গেছি আমি – এটা মনে রাখতে হবে।”
এরপরও নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে চিৎকার করে প্রতিবাদ করতে থাকলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ আমার পরিবার, আওয়ামী লীগই আমার আপনজন। এই আওয়ামী লীগেই আমি সবচেয়ে বেশি সময় দেই, যতটা সময় আমি নিজের ছেলেমেয়েকেও দেইনি।”
এর আগে দ্বিতীয় অধিবেশনের শুরুতে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ যথন ক্ষমতায় থাকে তখনই দেশের উন্নতি হয়। এ উন্নতি ধরে রাখতে আবারো দলকে ক্ষমতায় নিতে কাউন্সিলরদের আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিএনপির আমলে বাংলাদেশ পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আর আমাদের সময় বিশ্বব্যাংক অভিযোগ করেও তা প্রমাণ করতে পারেনি। পদ্মা সেতু নিয়ে তারা অভিযোগ করলে আমি তার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ দিয়েছি। সেই সৎসাহস ছিল কারণ আমি বা আমার পরিবারের কেউ কোনো দুর্নীতি করে ভাগ্য গড়তে যাইনি। এজন্যই আজ আমাদের নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু তৈরি হচ্ছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, যারা মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিল তারাও আজ বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশকে নিয়ে খেলা এত সহজ নয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে থাকতে কেউ এদেশকে অপমান করবে, খেলবে, যা খুশি তাই করবে – তা সম্ভব নয়।
কাউন্সিলর ও নেতাকর্মীদের আত্মবিশ্বাস, সততা ও দৃঢ়তা নিয়ে জনগণকে ভালোবেসে জনকল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
দলের সভাপতির ভাষণের পর কাউন্সিলররা বক্তৃতা করেন।
ভিডিওটি দেখুন এখানে: