প্রিন্স চার্লসের সাথে বিচ্ছেদের পর প্রিন্সেস ডায়ানার রাজমুকুট না থাকলেও ততোদিনে বিশ্বের কোটি মানুষের হৃদয়ের রানী হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কোটি ভক্তদের কাছে স্মিত হাসির ডায়ানা আজও প্রিন্সেস। অকালপ্রয়াত ডায়ানার হাসিমাখা মুখ আজ শুধুই ছবি। কৈশোরে মা হারা প্রিন্স উইলিয়াম মায়ের ছবি দেখে বড় হলেও এবার নিজ কন্যার মুখেই দেখবেন মায়ের প্রতিচ্ছবি। মায়ের নামেই মেয়ের নাম রেখেছেন তিনি।
প্রয়াত ডায়ানার স্মৃতি ধরে রাখতে উইলিয়াম ও কেট দম্পতি তাদের দু’দিন বয়সী ছোট্ট রাজকন্যার নাম রেখেছে শারলট এলিজাবেথ ডায়ানা।
এই নামের মধ্যেদিয়ে অনেকদিন পর আবারো নতুন করে আলোচনায় এলেন প্রিন্সেন ডায়ানা।
সৌন্দর্য আর মানবিকতার মিশেলে অনন্য এক বিশ্ব আইকন লেডি ডায়ানা ছিলেন তিনি। পুরো নাম লেডি ডায়ানা ফ্রান্সেস স্পেন্সার। ১৯৬১ সালের ১ জুলাই ইংল্যান্ডের নরফোকে এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ডায়ানা।
১৯৮১ সালে প্রিন্স চার্লসের সাথে বিয়ের পর লেডি ডায়ানা স্পেন্সার নতুন নাম হয় ডায়ানা ফ্রান্সেস মাউন্টব্যাটেন-উইন্ডসর। ১৯৮২ সালে প্রথম সন্তানের মা হন ডায়ানা। তার বড় ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম ও ছোট সন্তান প্রিন্স হ্যারি। ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারীদের তালিকায় যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয়।
প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে ডায়ানার বিবাহিত জীবন সুখের হয়নি। এ নিয়ে ওই সময়ে গণমাধ্যমে দু’জনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ প্রকাশিত হয়। পরস্পরের প্রতি অবহেলা, অবিশ্বাসের অভিযোগসহ আরও নানা কারণে ১৯৯২ সাল থেকে আলাদা থাকা শুরু করেন দুজন।
অবশেষে ১৯৯৬ সালে তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। ১৯৮১ সালে বিয়ের পর থেকে ১৯৯৬ সালে বিয়ে বিচ্ছেদ পর্যন্ত ডায়ানাকে ‘হার রয়েল হাইনেস দ্য প্রিন্সেস অব ওয়েলস’ বলে সম্বোধন করা হতো। পরে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের আদেশে তাকে শুধু ডায়ানা, প্রিন্সেস অব ওয়েলস বলে সম্বোধনের অনুমতি দেয়া হয়।
রাজপরিবারের বধূ হয়েও ফ্যাশন ও সৌন্দর্য ছাড়াও বসনিয়া, অ্যাঙ্গোলার মত দেশে ভূমি মাইন অপসারণ, এইডস রোগ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে তার অবদান তাকে স্মরণীয় করেছে।
১৯৯৭ সালে ফ্রান্সের প্যারিস শহরে ডায়ানা ও তার বন্ধু মিসরীয় ধনকুবের দোদি ফায়েদ এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান বহুমানুষের হৃদয়ের রানী।
প্যারিসের পন্ট-ডি-আলমা রোড টানেলে ঘটে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা। বলা হয়, ডায়ানার ছবি তোলার জন্য তার পেছনে অনবরত লেগে থাকা ফটোগ্রাফারদের থেকে দূরে থাকার জন্য ডায়ানা-দোদিকে নিয়ে খুব দ্রুত চলছিল গাড়িটি।
ধারণা করা হয় এই ‘পাপ্পারাজি’ নামে পরিচিতি পাওয়া নাছোড়বান্দা ফটোগ্রাফারদের কারণে প্রাণ হারান ডায়ানা।