করোনাকালে একের পর এক সমস্যা যেন লেগেই আছে। করোনায় মৃত্যু-আক্রান্ত শঙ্কা ও লকডাউনে বিপর্যস্ত জনজীবনে নতুন আরেক উদ্বেগের নাম বন্যা। দেশের একাধিক নদ-নদীর পানি বাড়ায় দেশের নদী সংলগ্ন অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসছে বন্যা।
আজ শুক্রবার পদ্মা, যমুনা ও তিস্তা নদীর পানি একাধিক পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এ ছাড়া দেশের নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, সুরমা ব্যতীত দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি বাড়তে পারে এবং অববাহিকাভুক্ত নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদী মথুরা ও আরিচা পয়েন্টে এবং পদ্মা নদী সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
গণমাধ্যম ও আবহাওয়া অফিস সূত্রের খবর, ভারত গঙ্গার উজানে ফারাক্কা বাঁধ, তিস্তার উজানে গজলডোবাসহ সবকটি বাঁধ-ব্যারেজ খুলে দিয়েছে। এতে হু হু করে নামছে উজানের ঢল। ফলে পদ্মা, যমুনা, তিস্তা, গড়াইসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পাড়ের এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এসব নদী এলাকাগুলোর চরাঞ্চল, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটছে।
সবমিলিয়ে পরিস্থিতি যে খারাপের দিকে যাচ্ছে তা বলাই যায়। করোনার কারণে প্রেক্ষাপট বদলেছে, মানতেই হবে অর্থনৈতিক দিক থেকে বেশ নাজুক বর্তমান পরিস্থিতি। এ কারণে এবারের বন্যা নতুন করে মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে আমাদের শঙ্কা।
বাঙালি জাতির জীবনে ঝড়-ঝঞ্ঝা-বন্যা পরিস্থিতি দেশের জন্য নতুন কিছু না, প্রতিবছরই এটি হয়ে থাকে এবং সরকার-জনগণ সবাই মিলে এই পরিস্থিতি মোকাবিলাও করে থাকে সফলতার সঙ্গে। এবারের বন্যার বিষয়ে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আগে থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কার্যকর পরিকল্পনা নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে। জনগণকেও হতে হবে সচেতন। তাহলে প্রতিবছরের মতো এবছরও বন্য মোকাবিলা করা অনেকটাই সহজ হবে।