ভোজন রসিক মানুষদের জন্য এই কথা মিথ্যে নয় যে খাওয়াই জীবন, খাওয়াই মরণ। আবার এই প্রবাদটিও সত্য যে এক খাবারে মানুষ বাঁচে আবার এক খাওয়ার জন্যই মানুষ মরে।
সম্প্রতি নতুন একটি গবেষণায় দেখা গেছে সারা বিশ্বে মানুষদের অকাল মৃত্যুর অন্যতম একটি প্রধান কারণ হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর খাবার।
আগে পৃথিবীতে বেশির ভাগ মানুষের অকাল মৃত্যুর প্রধান কারণ যেখানে ছিলো ধূপমান ও অ্যালকোহল; এখন এর পরিবর্তে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মানুষের জীবনের জন্য বড় হুমকি বলে বলা হচ্ছে।
১৯৯১ সাল থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে ১০৮ টি দেশের মানুষের ওপর পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, মানুষের অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের জন্য অকাল মৃত্যুর হার ৬৭ থেকে ৭৯ শতাংশে বেড়ে গেছে।
গবেষকরা অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বলতে খুব কম শাক-সবজি আর বাদাম ও অতিরিক্ত পোড়া মাংস, চিনি, লবণ, সুস্বাদু ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার খাওয়াকে বুঝিয়েছেন।
ইউকেতে আগে হার্ট অ্যাটাকের প্রধান কারণ ছিলো ধূপমান আর দ্বিতীয় স্থানে ছিলো অ্যালকোহল। কিন্তু বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাকের প্রধান কারণ এখন ফাস্ট ফুড জাতীয় অস্বাস্থ্যকর খাবার।
যুক্তরাষ্ট্রের হেলথ ম্যাট্রিক্স এন্ড ইভল্যিশান সংস্থাটি বিভিন্ন জরিপে দেখেছে, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস আর অকালমৃত্যুর জন্য মজাদার, সুস্বাদু ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবারই দায়ী। সংস্থাটির পরিচালক ড. ক্রিস্টোফার মারির মতে, এখন ধূমপান ও অ্যালকোহলের মতো পরিবেশ দূষণ, অস্বাস্থ্যকর খাবার সারা বিশ্বে মানুষের জন্য হুমকীি স্বরূপ।
আর ইউকেতে হার্ট অ্যাটাকসহ বিভিন্ন হৃদরোগ জাতীয় অসুখের জন্য এখন আর অ্যালকোহল ও ধূপমান দায়ী নয় বরং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের জন্য মানুষের অকাল মৃত্যুর হার ৯.৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। ভারতসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে বায়ু দুষণের জন্যও সবার হৃদরোগসহ বিভিন্ন অসুখ হয়ে থাকে।
তবে, সাব সাহারান আফ্রিকান দেশগুলোতে মানুষের অকাল মৃত্যুর ক্ষেত্রে সারা বিশ্ব থেকে এক ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। শিশু বয়স থেকেই পুষ্টিহীনতা, দূষিত খাবার পানি, অনিরাপদ যৌন ব্যবস্থ্যা, অ্যালকোহল মানুষের অকাল মৃত্যুর প্রধান কারণ।