ধর্ষণের শিকার নারীকে বিয়ে করার পর ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া এক ব্যক্তিকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
উভয় পক্ষের সম্মতিতে কারাফটকে বিয়ে হওয়ার বিষয়টি অবহিত হয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ কারাবন্দী দিলীপ খালকোকে ১ বছরের জামিন দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরোয়ার হোসেন বাপ্পী। অন্য পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহেদ চৌধুরী।
ওই মামলার নথি থেকে জানা যায়, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ওই আসামির সঙ্গে তার আত্মীয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে ২০১১ সালে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু ওই ব্যক্তি তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান।
এরপর সেই বছরের ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ী থানায় মেয়েটি ধর্ষণের মামলা করেন। বিচার শেষে ২০১২ সালের ১২ জুন রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ওই ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এই রায়ের পর থেকেই আসামি কারাগারে আছেন।
এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী ওই নারীকে বিয়ে করবেন বলে আসামির পক্ষে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করা হয়। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২২ অক্টোবর হাইকোর্ট দুই পক্ষের সম্মতি থাকলে আসামি ও ভুক্তভোগী নারীর বিয়ের ব্যবস্থা করতে রাজশাহীর জেল সুপারের প্রতি নির্দেশ দেন। আর বিয়ে হলে সে বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
হাইকোর্টের এই আদেশের পর গত ৫ ডিসেম্বর দুপুরে হিন্দু বিয়ে নিবন্ধক কারাফটকে বর ও কনের সই নেন। এরপর পুরোহিত বিয়ের মন্ত্র পাঠ করেন। একপর্যায়ে মালাবদলে সম্পন্ন হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
সেদিন কারা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে কনের হাতে একটি কাতান শাড়ি তুলে দেওয়া হয়। ওই বিয়েতে উপস্থিত ছিল বর ও কনের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া নয় বছরের ছেলে।
বিয়ের বিষয়টি প্রতিবেদন দিয়ে হাইকোর্টকে অবহিত করা হলে আজ আসামিকে ১ বছরের জামিন দেন হাইকোর্ট।