চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ধর্ষণের শিকার ছাত্রীদের স্কুল থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার সেই তিন ছাত্রীকে টিসি দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঘাটাইল এসই পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

এদিকে তিন শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাস করার জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিতভাবে অনুমতি চাইলেও তা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ তাদের।

তবে কোন টিসি দেয়ার মত ঘটনা ঘটেনি এবং নিয়মিত ক্লাস কার্যক্রম করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন স্কুলটির সভাপতি।

এদিকে দীর্ঘদিন পর নির্যাতিতা ওই কিশোরীরা স্কুলে গেলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাদের আর এই স্কুলে রাখা হবে না বলে অবহিত করে। পরে তাদের টিসি দিয়ে বের করে দেয় বলে অভিযোগ তাদের।

এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক বুলবুলি বেগম বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে একজনকে এবং অপর দুই মেয়েকে তাদের ইচ্ছায় টিসি দেওয়া হয়েছে। ওরা যদি আবার এ স্কুলে পড়তে চায়, সে ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে তাদের আবার স্কুলে ভর্তি করে নেওয়া হবে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ঘাটাইল উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইমলাম লেবু বলেন, মেয়েগুলোর বিষয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ আমাদের উপর নানা চাপ প্রয়োগ করে আসছিলো। ওই মেয়েরা যদি স্কুলে আসে তবে অভিভাবকগণ তাদের মেয়েদের অন্য স্কুলে ভর্তি করাবেন। আর এ বিষয়টিই মৌখিকভাবে তাদের জানানো হয়েছিলো। তবে কোন টিসি দেয়ার মত ঘটনা ঘটেনি। অন্য শিক্ষার্থীরা থাকুক বা না থাকুক তারা আগের মতোই নিয়মিত ক্লাস কার্যক্রম চালাতে পারবেন।

এ ব্যাপারে মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী আতোয়ার রহমান আজাদ জানিয়েছেন, সমাজ তাদের সঙ্গে দুইটা অন্যায় করেছে। সমাজের অন্ধকার জগতের মানুষগুলো তাদের নির্যাতন করেছে। অন্যদিকে এখন সমাজের আলোকিত মানুষগুলো তাদের জীবন অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমি মনে করি, তাদের শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া দরকার। একই সাথে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি হওয়া উচিত।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম বলেন, মেয়েগুলো ঘটনার শিকার। তারা কেন শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, সকলেরই শিক্ষার অধিকার আছে। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ২৬ জানুয়ারি চার বান্ধবী ও দুই বন্ধু মিলে পাহাড়ি এলাকায় বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় তারা। পরে পুলিশ সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে। ২৭ জানুয়ারি এক ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ঘাটাইল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে।