ধর্মকে পুঁজি করে ধর্মভীরু ও স্বল্প শিক্ষিত লোকজনদেরকে নিজের প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডে (FICL) বিনিয়োগে উৎসাহী করতেন শামীম কবির (৪৫)। প্রথম কয়েক বছর কথা অনুযায়ী লভ্যাংশ প্রদান করলেও সবশেষে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পলাতক হন শামীম কবির।
একে একে দেশের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় ২৮ টি মামলা। দীর্ঘ চার বছর পলাতক থাকার পর অবশেষে ধরা পড়েন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে।
মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মোল্যা নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ২০০৬ সালে অনুমোদন নিয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কার্যক্রম শুরু করে ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড। পরে সমিতিটি বিভাগীয় পর্যায়ে অনুমোদন নিয়ে ২৫ টি অফিস খুলে কার্যক্রম শুরু করে। শামীম কবির ইসলাম ধর্মকে পুঁজি করে ধর্মভীরু ও স্বল্প শিক্ষিত লোকজনদেরকে আল্লাহর মহান বাণী শুনিয়ে উদ্বুদ্ধ করতো।
পবিত্র কোরআন শরীফসহ বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে সুসজ্জিত অফিসে দাওয়াত দিয়ে প্রতিষ্ঠানে টাকা বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করতো। বিনিয়োগকৃত প্রতি ১ লাখ টাকায় প্রতি মাসে দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা হারে মুনাফা দেওয়ার কথা প্রচার করতো। শুরুতে ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত কথা অনুযায়ী লভ্যাংশও দিয়ে আসছিলো।
এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে সাধারণ মানুষ নিজের সর্বস্ব বিনিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানটিতে। ২০১৪ সালে একপর্যায়ে প্রায় ২০ হাজার গ্রাহকদের তিন শত কোটি টাকা আত্মসাৎ আত্মগোপনে যান শামীম। আত্মসাতের অর্থ দিয়ে তিনি কুমিল্লা ও সিলেটে প্রাসাদসম বাড়ি এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিজের নামে প্রায় ৪০ একর জমি ক্রয় করেন।
সিআইডির এই কর্মকর্তা আরো বলেন, প্রথমে কথিত ছিলো টাকা আত্মসাত করে শামীম বিদেশে পালিয়ে গেছেন। তার বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মানি লন্ডারিংয়ের মামলাটির তদন্তভার পায় সিআইডি। দীর্ঘ প্রায় চার বছর পলাতক থাকার পর একপর্যায়ে সিলেটের জৈন্তাপুর থেকে শামীম কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।