চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

‘দ্বিতীয় কোনো কথা নেই, আমি নির্বাচন করতে চাই’

আগামি সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান অভিনেতা ফারুক

আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হতে চান চলচ্চিত্র পরিবারের আহ্বায়ক ও এক সময়ের তুখোড় চলচ্চিত্র অভিনেতা ফারুক।

চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে নিজের ইচ্ছা ও অবস্থান জানিয়ে তিনি বলেন: গাজীপুর-৫ আসন, মানে কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগের যে শক্ত ঘাঁটি ছিলো সেটা এখন আর নাই। আওয়ামী লীগের অবস্থাকে নাজুক করে দেয়া হয়েছে। এই আসনটাকে আবার শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত করতে হবে।

‘এখন যারা আছেন তারা আরো নাজুক করছেন। আমি মনে করি, কালীগঞ্জকে আবার সেই পুরনো শক্তিশালী ঘাঁটি করতে হবে। এজন্যই এখানে প্রয়োজন আছে আমার ইলেকশন করার। আগামীতে আমি ইলেকশন করতে চাই,’ বলে ইচ্ছার কথা জানান ফারুক।

সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার কোনো আশ্বাস পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে ফারুক বলেন: মনোনয়নের বিষয়টা দেরি আছে। কিন্তু আমারতো কাজ কর্ম চলছে। অনেকে ছবি টাঙায়, শুভেচ্ছা দেয় কিন্তু আমি কাজ করছি আমার মতো। আমার ওয়ার্ক হলো ভেতরে ভেতরে। আমারতো ছবি টাঙানোর দরকার নেই।

শুধু গাজীপুর নয়, দেশের আনাচে কানাচে জনসংযোগ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন: শুধু গাজীপুর নয়, বাংলাদেশের এমন কোনো জেলা নেই যেখানে আমি জনসভা করিনি। কথা বলেছি মানুষের সাথে। মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কথা বলেছি। নিজেকে যাচাই করেছি।

‘চট্টগ্রাম যখন গিয়েছি তখন সেখানকার মানুষ বলে, আপনি চট্টগ্রাম থেকে নমিনেশন নেন। এখান থেকে আপনি পাশ করে যাবেন। এতো ভালোবাসে মানুষ আমাকে। আবার দেখা গেল নর্থ বেঙ্গলের মানুষও আমাকে একই কথা বলেছে। সিলেটে গিয়েও এরকম প্রচুর কথা আমি শুনেছি। মানে মানুষ আমাকে ভালোবাসে।’

তিনি বলেন, আমি হয়তো চলচ্চিত্র বা অন্য কোনো সংগঠনের ডাকে যাই, কিন্তু সেখানে গিয়ে আমি কিন্তু স্বাধীনতার পক্ষের কথাই বলে থাকি। আওয়ামী লীগের পক্ষের কথা বলি। বঙ্গবন্ধুর কথা বলি।

তার মানে আগামী নির্বাচনে আপনি পুরোপুরি অংশ গ্রহণ করতে প্রস্তুত? প্রশ্নে ফারুক বলেন: দ্বিতীয় কোনো কথা নেই, আমি আগামীতে নির্বাচন করতে চাই। আমি আমার দলের কাছে মনোনয়ন চাই। আমি আমার পার্টির চিফের কাছে অন্তর থেকে মনোনয়ন চাই। আমার চাওয়াটা আমি বললাম। আমি আশা করি আমাকে ধাক্কা দিয়ে দল থেকে সরিয়ে দেবে না।

‘শুধু নিজে এমপি হওয়ার জন্যে না, দলের জন্যও আমি কিছু করতে চাই। ওই এলাকাটা ছিল আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। এটাকে ধীরে ধীরে আগের লোকগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে। ব্যাড পলিটিক্স করে যাকে যে জায়গায় রাখার কথা থানা কমিটিতে তাকে সেই জায়গায় রাখেননি। বিভাজন তৈরি করার ফলে দলের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। আর এখানে ব্যক্তি ইমেজ নেই কারো, সবাই আওয়ামী লীগের উপর ভর করে রাজনীতি করে। নিজেরওতো কিছু কর্মকাণ্ড থাকা লাগবে।’ এভাবেই কালীগঞ্জ আসনে নিজের অবস্থান নিয়ে যুক্তি তুলে ধরেন ফারুক।

অভিনেতা হিসেবে দল-মত নির্বিশেষে সবার কাছে যে গ্রহণযোগ্যতা, একটি দলের পক্ষ হয়ে রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিলে সেটা টিকে থাকবে কিনা জানতে চাইলে চলচ্চিত্র পরিবারের আহ্বায়ক ফারুক বলেন: এখন আমার যে গ্রহণযোগ্যতা আছে, নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার পরও এমনটাই থাকা উচিত বলে আমি মনে করি। কারণ আমি কী, সেটা জানেন সবাই।

স্কুল জীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত লাঠিয়াল খ্যাত অভিনেতা ফারুক। ছয় দফা আন্দোলনের পর মুক্তিযুদ্ধেও অংশ গ্রহণ করেছেন তিনি।

বর্তমানে অভিনয়ে নিয়মিত না থাকলেও চলচ্চিত্রকে ছেড়ে যাননি বাংলা চলচ্চিত্রের এই অভিনেতা। এফডিসি কেন্দ্রিক ‘চলচ্চিত্র পরিবার’-এর আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সব ঠিক থাকলে সামনে চলচ্চিত্র নির্মাণেও দেখা যাবে তাকে।

ছবি: তানভীর আশিক