অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য খাবার দোকানের সামনে খাবারের ঝুড়ি রাখা। অসহায়, দরিদ্র ক্ষুধার্ত যে কেউ ওই ঝুড়ি থেকে নিঃসংকোচে খাবার নিতে পারবেন। শুধু তাই নয়, সামর্থ্যবানরা তাদের সামর্থ অনুযায়ী ঝুড়িতে রেখে যেতে পারেন খাবার।
“ফুটবে মুখের হাসি, মিটবে পেটের ক্ষুধা’’ এই শ্লোগানে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা পাথওয়ে নিয়েছে এ ব্যতিক্রমী অন্নদানের উদ্যোগ।
উদ্যোক্তা সংগঠনটির কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিদিনই ১০টি স্থানে বিভিন্ন খাবারের দোকানের সামনে থাকছে খাবারের ঝুড়ি। গরীব দুঃখী ছাড়াও প্রতিবন্ধী, মানসিক ভারসাম্যহীন ও শারীরিকভাবে অক্ষমরা ওই ঝুড়ি থেকে পাবেন খাবার। ধীরে ধীরে এই উদ্যোগ ছড়িয়ে দেয়া দেয়া হবে পুরো ঢাকা শহরে।উদ্দেশ্য একটাই সুবিধাবঞ্চিত অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটানো।
সংগঠনটি সূত্রে জানা যায়, মিরপুর-১৩ এর মসজিদ মার্কেট এলাকায় ৩টি, সেনপাড়া কাফরুল আমতলা বাজারে ৪টি, মিরপুর-১০ এসএ পরিবহন এর আশপাশ এলাকায় ৩টি দোকানের সামনে এই খাবারসমেত ঝুড়ি বসানো হয়েছে।
নিজের মানবিক মূল্যবোধ আর সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে স্বামর্থ্যবানদের সাধ্য অনুযায়ী এ উদ্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক মো. শাহীন।
তিনি বলেন, শহুরে এ জীবনে উৎসবের নিয়ন আলো আর উচ্চস্বরে চলতে থাকা গানের মূর্চ্ছনায় চাপা পড়ে হাজারো ক্ষুধার্ত মানুষের কান্নার শব্দ। দূর থেকে ভেসে আসা খাবারের সুগন্ধে দিশেহারা ক্ষুধার্তদের কষ্টে কাতর মানুষগুলোর ক্ষুধার নিবারণে ক্ষুদ্র এ প্রয়াস।
‘ভাবনাতেই আটকে না থেকে লেগে পড়েছি বাস্তবায়নে। জানি কষ্ট হবে। তবে শুরু করতে পারলে অনেকেই এগিয়ে আসবে এই ভেবেই শুরু করা। বিভিন্ন দোকানের সামনে খাবার সংগ্রহের কাজ শুরু করেছি। প্রথম দিকে আস্থার সংকটে অনেকটা কঠিন হয় খাবার সংগ্রহের কাজটি। কিন্তু সদিচ্ছা ও মানুষকে সেবা দেয়ার আন্তরিক লক্ষ্য সব বাধা দূর করে খাবার সংগ্রহের জন্য দোকানে দোকানে ঝুড়ি দেয়ার কাজে নেমে পড়ে সংস্থাটির স্বেচ্ছাসেবকরা।’
তিনি বলেন, ‘‘এক মাসে আগে শুরু হয় অসহায়, ক্ষুধার্ত, মানসিক ভারসাম্যহীন এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দেয়ার কাজ। অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিতদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশে পাথওয়ের পাথওয়ের এ ভিন্ন উদ্যোগ দারুনভাবে সফল হচ্ছে। এই উদ্যোগে অনেকেই নীরবে বিবৃতে আড়ালে থেকে সুবিধাবঞ্চিত ক্ষুধার্তদের পাশে দাঁড়াতে পারছেন। বর্তমানে মিরপুর ও কাফরুল থানাধীন মোট ১০টি স্থানে এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে। এলাকায় ইতোমধ্যে ‘অন্নদান’ নামে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েঠে এ উদ্যোগ।’’
সংগঠনটি বলছে উদ্যোগটি আনন্দময় করে তুলতে সবাইদর সর্বাত্মক সহযোগীতা দরকার। ধনী, দরিদ্র সবাই মিলেই আমরা এই উদ্যোগটি গোটা শহরে ছড়িয়ে দিতে চাই।