দীর্ঘ ১৮ বছরের আফগান যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে আগামী ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের শর্ত রেখে জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবানের সঙ্গে ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
শনিবার কাতারের রাজধানী দোহায় এই চুক্তি সই হয়। সেখানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং দোহায় তালেবানদের মুখপাত্র সোহাইল শাহীন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দুপক্ষের স্বাক্ষরিত চুক্তিতে বলা হয়, তালেবানরা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ন্যাটো সহযোগী দেশগুলো আফগানিস্তান থেকে আগামী ১৪ মাসের মধ্যে সব সৈন্য সরিয়ে নেবে। তবে তালেবান ও আফগান সরকার সেদেশে আল-কায়দা বা অন্য যে কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিতে পারবে না।
একই সঙ্গে আফগান সরকার এবং তালেবানের সঙ্গে পরবর্তীতে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
২০০১ সালের সেপ্টেম্বর আফগানিস্তান ভিত্তিক আল-কায়েদা যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারসহ কয়েকটি জায়গার জঙ্গি হামলা চালায়। তাতে সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয়। এরপর আফগানিস্তানে পাল্টা হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।
তারপর গত প্রায় ১৮ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২৪০০ মার্কিন সৈন্য নিহত হয়। সেদেশে এখন ১২ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে।
২০১১ সাল থেকে আফগানিস্তানে শান্তি নিয়ে আলোচনা করতে আসা তালেবান নেতাদের আশ্রয় দিয়েছে কাতার। ২০১৩ সালে তালেবানের একটি কার্যালয় চালু করা হয়, তবে পতাকা নিয়ে বিরোধে সেই বছরই সেটা বন্ধ করে দেয়া হয়।
২০১৮ সালে এ জঙ্গি বাহিনী ঘোষণা করে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে করে শান্তির একটি রোডম্যাপ তৈরি করবে।
শেষ পর্যন্ত কাতারে ৯ দফা আলাপ-আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান এ চুক্তিতে আসতে সম্মত হয়।
দীর্ঘসময় ধরে যুদ্ধ চলা দেশটিকে ঘিরে এমন সমঝোতায় আসতে পারায় দু’পক্ষই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে৷
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই চুক্তি ট্রাম্পকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে জনসমর্থন আদায়ে সহযোগিতা করবে।