পৃথিবীতে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ বিষন্নতায় ভুগছে। দেশ ভেদে শতকরা ৩ থেকে ১৭ জন মানুষ বিষন্নতায় আক্রান্ত। বাংলাদেশের প্রাপ্ত বয়স্ক জনগোষ্ঠীর শতকরা ৪.৬ ভাগ বিষন্নতায় আক্রান্ত বলে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার এক জরিপে জানা গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস-২০১৭ উপলক্ষে বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার ক্যলাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার জরিপের বরাত দিয়ে তিনি এই তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। একই সাথে অন্যান্য জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হবে।
বিষন্নতার সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সার্বজনীন সমর্থন অর্জনের লক্ষ্যে এ বছরে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের নির্বাচিত বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘আসুন, বিষণ্নতা নিয়ে কথা বলি।’
জরিপে বলা হয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে বিষণ্নতার লক্ষণ প্রথম বারের মতো দেখা যায়। এছাড়া ১৫ থেকে ১৮ বছর ও ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এর ঝুঁকি কিছুটা বেশি। দীর্ঘ মেয়াদী রোগ, দারিদ্র, বেকারত্ব, একাকিত্ব, পারিবারিক ও সম্পর্কের সমস্যা, গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী সময়, বিবাহ বিচ্ছেদ, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, প্রবাস জীবন, অভিবাসন, মাদকসেবন ইত্যাদির কারণে বিষণ্নতা দেখা দিতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ অনুযায়ী, সারাবিশ্বে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেন। এ হিসেবে বছরে আত্মহত্যার সংখ্যা প্রায় ১১ লাখ। এর মধ্যে বেশিরভাগ আত্মহত্যা ঘটে বিষণ্নতাজনিত কারণে। বর্তমান বিশ্বে ডিজিজ বার্ডেন হিসেবে বিষন্নতার স্থান তৃতীয়।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে স্বাস্থ্য ও পরিবার ক্যলাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে জাতীয় পুষ্টি প্রতিষ্ঠান আয়োজিত স্বল্প ওজনে জন্ম নেওয়া শিশুদের নিয়ে একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এসময় স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্তি সচিব রোকসানা কাদের, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদসহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে রাজনীতি না করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে আমি কোন রাজনীতি করিনা। সেবার বিষয় নিয়ে কারো রাজনীতি করা উচিত নয়। আশা করি স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেন না। আমরা তো মানুষের জন্যই রাজনীতি করি।