দেশের স্বার্থে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিশ্বে যে ৫টি দেশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ তাদের একটি।
বিশাল সমুদ্র এলাকা এবং এই বিশাল জলরাশিতে থাকা বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। সে কারণে এই বাহিনীকে আরো যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার পাশাপাশি বাহিনীর দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে সরকার। দিন দিনই এই বাহিনীর দক্ষতা ও সামর্থ্য বাড়ছে।
সেই ধারাবাহিতায় এ বছর এই বাহিনীতে পাসিং আউট প্যারেডের মাধ্যমে কমিশন পেলেন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার পদে ২৪ জন ও মিডশিপম্যান পদে ৫৩ জন।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন।
প্রশিক্ষণের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের সোর্ড অব অর্নার, শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক এবং নৌবাহিনী প্রধান স্বর্ণপদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
মুক্তিযুদ্ধে নৌবাহিনীর অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই বাহিনী যে গৌরব ও মর্যাদা এনেছে তা অক্ষুণ্ণ রাখতে সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি বলেন, এভাবে বিশ্বে বাংলাদেশ মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাবে, সেই লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ সমগ্র বিশ্বে প্রবৃদ্ধি অর্জনে সফল ৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। কাজেই আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে বিজয় অর্জন করেছি, বিজয়ী জাতি হিসেবে যে সম্মান অর্জন করেছি, তা অব্যাহত রাখার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, সমুদ্রসীমা ও সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষা করা, আহরণ করা, অর্থনীতিতে কাজে লাগানো, দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করার ক্ষেত্রে এগুলোর প্রয়োজীয় ব্যবস্থাপনা করা একটি বিরাট দায়িত্ব, যা নৌবাহিনীর ওপরই বর্তায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সমুদ্র এলাকায় টহল বাড়াতে নৌবাহিনীতে মেরিটাইম হেলিকপ্টার, মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফট সংযোজন করা হয়েছে। নেভাল এভিয়েশন ও বিশেষ বাহিনী সোয়াট গঠনের পাশাপাশি নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে দু’টি মিসাইল ফ্রিগেট, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি একটি ফ্রিগেট, দু’টি মিসাইল গর্বেট এবং খুলনা শিপইয়ার্ডে তৈরি ৫টি প্যাট্রোলক্রাফট। এর ফলে নৌবাহিনীর বিশাল সমুদ্র এলাকায় টহল এবং পর্যবেক্ষণের ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
পরে জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ড্রাইডককে নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দেন। এই ড্রাইডকে ১৭৫ মিটার এবং ২০ হাজার মেট্রিকটন ওজন সম্পন্ন কার্গোশিপ, প্যাট্রোলবোর্ড, অয়েল ট্যাংকার, লঞ্চ, সাপ্লাই ভেসেল মেরামতের কাজ করা সম্ভব।