দেশের কষ্টার্জিত সম্পদ যাতে অপচয় না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লক্ষ্য পূরণে কর্মকর্তাদের বেশি শ্রম দেয়ার তাগিদ দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
সিনিয়র সচিবসহ সচিবরা ৪৮টি মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের পক্ষে স্বাক্ষর করা চুক্তিপত্র প্রধানমন্ত্রী কাছে হস্তান্তর করেন। রূপকল্প ২০২১, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, জাতিসংঘ-ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনার বিষয়গুলো সামনে রেখে এ কর্মসম্পাদন চুক্তি সই হয়েছে। এ চুক্তি মূলত মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১ বছরের কর্মসম্পাদনের প্রতিশ্রুতি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের কাছে ক্ষমতা হল কর্তব্য পালনের, জণগণের প্রতি কর্তব্য পালনে কর্মপন্থা নির্ধারণ করেই এগুতে হয়। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ৯০ শতাংশ এখন বাস্তবায়ন হয় নিজস্ব অর্থে যা দেশের অগ্রগতির বিশেষ লক্ষণ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প প্রণয়ন শুধু অর্থ ব্যয়ের চিন্তা থেকে যেন না হয়। প্রকল্প থেকে দেশের কতটুকু উন্নতি হবে আর এর সুফল মানুষ কতটুকু পাবে সেই হিসেবটা মাথায় রাখতে হবে। সেই সঙ্গে কষ্টার্জিত অর্থ যেন কোনোভাবেই অপব্যয় না হয়।
তিনি বলেন, ‘একসময় চিন্তা ছিল, ‘সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল’। এই চিন্তা থেকে ধীরে ধীরে দেশের মানুষকে সরিয়ে আনতে হবে। দেশের মানুষকেও ভাবতে হবে সরকারের সম্পদ হচ্ছে জনগণের। জনগণের কল্যাণেই এটি ব্যয় হবে।’
গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অরো সচেতন হওয়ার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, এ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির উদ্দেশ্য হলো, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ করে ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করে বাস্তবায়ন করা হলে তা খুব একটা কঠিন কাজ হয় না বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করা সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্য পূরণে একটু বেশি পরিশ্রম করতে হবে আপনাদের। তাহলেই আমরা অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নতি ত্বরান্বিত করার নীতিমালা নিয়েই আমরা সরকার গঠন করি। আমাদের লক্ষ্য একটাই গণতান্ত্রিক সুশাসনের মাধ্যমে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন। উন্নয়নের মাধ্যমে এই এগিয়ে চলা যাতে কোনো ভাবেই থেমে না যায়, সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে গেলে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সহজ হবে এবং এর সুফল গ্রামের মানুষ পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।