বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। দেশের রাজনীতি চলবে দেশের জনগন দ্বারা নির্বাচিত সরকার ব্যবস্থায়। এই সরকার ব্যবস্থায় নানা রকম সংকট অচলাবস্থা থাকবে। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় এইসব মানা না মানা রাজনীতিরই অংশ। কিন্তু দেশের রাজনীতি নিয়ে বিদেশে বা জাতিসংঘের কাছে ধর্না দেয়া একটি অসম্মানজনক পদ্ধতি।
সম্প্রতি নির্বাচনকালীন সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপি রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ সরব। তারা এই সরকারে অধীন কোনো নির্বাচনে যেতে চায় না। এ বিষয়ে তারা বর্তমান সরকারে সঙ্গে আলাপ আলোচনায় না গিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘের কোনো এক কর্মকর্তার কাছে গিয়েছেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক অবস্থা তুলে ধরার জন্য দলের মহাসচিব জাতিসংঘে গিয়েছেন।
আমাদের প্রশ্ন- জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট নিয়ে কী করবেন? দেশে কি এমন সংকট তৈরি হয়েছে যার জন্য আর্ন্তজাতিকভাবে মাথা ঘামাতে হবে? এখন সংবাদে প্রকাশিত জাতিসংঘের মহাসচিব তার সদর দপ্তরেই নেই। তিনি সাবেক জাতিসংঘ মহাসচিব কফি আনানের শেষকৃত্যে ঘানায় অবস্থান করছেন। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কারো চাপের কাছে সরকার নতি স্বীকার করবে না।
দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের এই অনড় আচরণ দেশের রাজনীতির জন্য শুভ কিছু বয়ে আনবে না। এখনই সময় জাতীয় সমঝোতার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজন করার। ক্ষমতাসীন সরকার সংবিধানের বাইরে যেতে নারাজ। বিএনপি সংবিধানের কথা শুনতে নারাজ। এই অবস্থায় একটি ন্যূনতম সমাধান আমরা আশা করি। কিন্তু এ নিয়ে বিদেশিদের কাছে ধর্না দেয়া দেশের জন্য কোনোভাবেই সম্মানজনক নয়। আমরা আরো বলতে চাই, দেশের রাজনৈতিক দল দেশের সংবিধান বিরোধী কোনো অবস্থানে যেতে পারে না।
যেকোনো দেশের রাজনীতির চলমান বা বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট রয়েছে এবং থাকবে। তবে এজন্য বিদেশিদের কাছে নালিশ দেয়া বা তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্য প্রকাশের সামিল। আমরা আশা করি, বিদেশিদের নিকট ধর্না দেয়ার সংস্কৃতি অচিরেই বন্ধ হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।