চট্টগ্রাম থেকে: নিজেদের মাটিতে শক্তিশালী দলের তকমা লাল বলের ক্রিকেটে আর ধরে রাখতে পারছে না বাংলাদেশ দল। গত ২৫ মাসে টেস্ট জয় নেই, ড্রয়ের স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি মুমিনুল হকের দল। তবে এই সময়কালে দেশের বাইরে দুটিতে জয় ও একটিতে ড্র করতে পেরেছে বাংলাদেশ।
রোববার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে আরও একটি টেস্ট সিরিজ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে খেলা শুরু সকাল ১০টায়। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হককে বেশ কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরেন সাংবাদিকরা। মনে করিয়ে দেওয়া হয় দেশের মাটিতে দলটির বিবর্ণ অবস্থার কথা।
একটা সময় ছিল যখন কিনা দেশের বাইরে টেস্টে লড়াই করার মানসিকতা দেখাতে পারত না বাংলাদেশ। তবে ঘরের মাটিতে লড়াই জমত দারুণ। সময়ের পরিক্রমায় সাদা পোশাকের ক্রিকেটে মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখা যাচ্ছে। গত দুই বছরে দেশের চেয়ে বরং দেশের বাইরেই বেশি সফল দলের নাম বাংলাদেশ।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয়ের কীর্তি এ বছরের শুরুতেই। গত বছর শ্রীলঙ্কা সফরে একটি টেস্ট ড্র করে ফিরেছে টাইগাররা। জিম্বাবুয়ে সফরেও বাংলাদেশ পেয়েছে টেস্ট জয়ের স্বাদ।
অন্যদিকে দেশের মাটিতে বাংলাদেশের সবশেষ টেস্ট জয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। তারপর আর জয় কিংবা ‘ড্র’ নেই বাংলাদেশের। কোভিড ও কোভিড পরবর্তী এই সময়ে বাংলাদেশ বিদেশের মাটিতে খেলেছে সাত টেস্ট। আর দেশে খেলেছে চারটি।
এ পর্যন্ত হওয়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২২টি টেস্টের মাঝে একমাত্র জয়টিও এসেছিল বিদেশ সফরে। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে নিজেদের শততম টেস্টে স্বাগতিকদের হারিয়েছিল বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ পর্যন্ত চারটি টেস্ট ড্র করেছে বাংলাদেশ। টেস্টে দলটির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রাপ্তি একদম কম নয়। সাফল্য কিংবা কক্ষপথে ফেরার সিরিজ হিসেবে এটিকে ধরতেই পারে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুলও দেশের মাটিতে জয়ের ধারায় ফেরার তাগিদ অনুভব করছেন। তবে দলটির বিপক্ষে অতীতের পরিসংখ্যান কিংবা সুখস্মৃতি এখন ভালো করতে সহায়তা করবে না বলে জানিয়েছেন মুমিনুল। তার লক্ষ্য পরিকল্পনা অনুযায়ী টেস্টের ৫ দিন চ্যালেঞ্জে জয়ী হওয়া।
‘যখন খেলি জেতার জন্য খেলি। এখানেও এই পরিকল্পনা নিয়েই খেলব। ম্যাচ জেতার জন্যই খেলব। আগে কী হল না হল এগুলো নিয়ে কখনও চিন্তা করতে পারবেন না। যারা ৫ দিন চাপ সামলাতে পারবে তারাই ম্যাচ জিতবে। অতীতে কী হয়েছে এসব ভূমিকা রাখে না।’
প্রতিপক্ষ নিয়ে মুমিনুলের ভাবনা তেমন নেই। বাংলাদেশ দলের চ্যালেঞ্জ নিজেদের সঙ্গেই মত দেন তিনি, ‘ওদের পরিস্থিতি (শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের প্রভাব) ওরা হ্যান্ডেল করবে। ওরা কী চিন্তা করছে সেটা আমাদের চিন্তা করার দরকার নেই। আমাদের কাজ হলো কীভাবে পাঁচ দিন ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, কীভাবে ডমিনেট করতে পারি। এটা হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। ওদের নিয়ে এত চিন্তা করছি না। ব্যাটসম্যান বা বোলার হিসেবে কীভাবে ভালো খেলতে পারব, এটাই চিন্তা করছি।’
সাকিব আল হাসান ফেরায় দলের শক্তিতে কিছু ভারসাম্য এসেছে। তবে চোটের কারণে তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজের ছিটকে যাওয়ার ক্ষতি পূরণ করতে হবে তাদের জায়গায় সুযোগ পাওয়া খেলোয়াড়দের। ফর্মে থাকা দুই ক্রিকেটারকে না পেলেও পুরো দলের প্রতি শতভাগ আস্থা রেখেই লঙ্কা-বধে নামবেন মুমিনুলরা।