নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, বাণিজ্যিক ও নির্মাণ কাজের কারণে দেশে প্রতিদিন গড়ে ৬৯২ একর কৃষি জমি হারিয়ে যাচ্ছে। ১৭ ভাগ ভূমি চলে যাচ্ছে ইটভাটা নির্মাণ ও পরিচালনা কাজে। এই হারে কৃষিজমি কমতে থাকলে এবং যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া না হলে আগামী কয়েক বছরে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকিতে পড়বে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে(জাবি) অনুষ্ঠিত ‘নগর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ‘পরিকল্পনা সপ্তাহ’ উদযাপন উপলক্ষে সিনেট হলে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে তিনটি সেশনে মোট ১১টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বক্তারা। তারা বলেন, বাংলাদেশের মোট আয়তনের ৪ দশমিক ৫ ভাগ পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন। অথচ পরিকল্পনার আওতায় এসেছে মাত্র ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা। ৮০ ভাগ ভবন নির্মিত হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে।
এসব সমস্যা সমাধান ও কৃষি জমি রক্ষার লক্ষ্যে বক্তারা বলেন, সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নই পারে এসব সমস্যা রোধ করতে। মানুষকে কেন্দ্র করে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি গুরুত্ব দিতে হবে মানুষের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য অনুষঙ্গকে।
সকাল ১০টায় সেমিনার উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনায় তাত্ত্বিক বিষয়ের সঙ্গে প্রায়োগিক বিষয়ের সমন্বয় করতে হবে। দেশে নগর অভিমুখী মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই নগর পরিকল্পনা ও সম্প্রসারণে সুদূরপ্রসারী হতে হবে।
নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শফিক-উর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, সাভার পৌরসভার মেয়র আবদুল গণি, ধামরাই পৌরসভার মেয়র গোলাম কবির, আরবান ডেভেলপমেন্ট কার্যালয়ের পরিচালক ড. খুরশীদ জেবিন হোসেন তৌফিক এবং হাউজ বিল্ডিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. আবু সাদেক প্রমুখ।
পৌরসভার মেয়রদ্বয় বলেন, দেশে মোট ৩২৮টি পৌরসভার মধ্যে অন্তত দুইশ পৌরসভা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী নয়। অথচ পৌরসভার নিজস্ব আর্থিক খাত থেকে পৌরসভার ব্যয় নির্বাহ করার সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না। তারা পৌরসভার জনবলকে সরকারের রাজস্ব খাতে নেয়ার আহ্বান জানান।