সিলেট থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে দেশের একমাত্র স্বীকৃত সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুলের অবস্থান সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নে। উত্তরে মেঘালয় থেকে নেমে আসা স্রোতস্বিনী গোয়াইন নদী, দক্ষিণে বিশাল হাওর। মাঝখানে জলাবন রাতারগুল।
বৃষ্টিতে পানি বেড়ে যাওয়ায় মূল ঘাট থেকে বেশ খানিকটা আগেই নৌকায় উঠতে হয় পর্যটকদের। এরইমধ্যে থেমে থেমে বৃষ্টি। চারদিকে নিস্তব্ধতার মাঝে নৌকার বৈঠার শব্দ। এরই মধ্যে কেউ কেউ মনের আনন্দে শব্দ করে কোরাস গান গেয়ে ওঠেন, আবার কেউ কেউ নিজের মতো করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে ভুলেন না।
কিছু দূর যাবার পর দেখা মেলে মূল বনের। বর্ষায় বড়ই অদ্ভুত এই জলের রাজ্য। বিশাল এ বনে রয়েছে জলসহিষ্ণু প্রায় ২৫ প্রজাতির গাছ যার কোনোটা কোমর পর্যন্ত ডুবে আছে পানিতে। একটু ছোট গাছগুলোর বেশিরভাগটাই পানিতে ডুবে। গাছপালা ঘন থাকার কারণে কিছুটা অন্ধকার পুরো বন। মাঝেমধ্যেই গাছের ডালপালা পথ আটকে দেয়। এরইমধ্যে অনেকে বনের মধ্যে করা টাওয়ার থেকে পুরো বন দেখার সুযোগ ছাড়তে চাননা।
তবে বর্ষায় এ বনে চলতে হয় খুব সাবধানে। কারণ পানি বাড়ায় সাপেরা ঠাঁই নেয় গাছের ওপর। ভারতীয় উপমহাদেশে সোয়াম্প ফরেস্ট আছে দুটি, একটি শ্রীলংকায় আর আরেকটি এই রাতারগুল। গাছের সাথে কিছু প্রাণীরও দেখা মেলে এ বনে। এমনই এক ঘোর লাগা সময়ে ঘুরে বেড়ানো বাংলার অ্যামাজন নামে পরিচিত গোয়াইনঘাটের রাতারগুল বন।