চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

দেশটা কি তোমাদের বাপের?

বিএনপি জামাত কামাল হোসেনের ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে সাম্প্রতিক একটা ভিডিও দেখলাম। যেই ভিডিওর আর্টিস্ট, ভিডিও মেকার, ভিডিওর ভাষা বডি ল্যাঙ্গুয়েজ সব কিছু নিয়েই আছে প্রশ্ন, তার চেয়ে বড় কথা হলো ভিডিওতে প্রাসঙ্গিক ভাবে স্ক্রিপ্টে যা বলে তারণ্যের কথা বলা হয়েছে এটা আমার দেশের তারুণ্যের ভাষা হতে পারে না। তাছাড়া ভিডিওর উক্ত বিষয় গুলো ভাবনার দিক দিয়ে শুরু থেকেই বিতর্কিত না হলেও এক পর্যায়ে সকল ঘটনাই বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। যার পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সাক্ষী এই দেশের সকল স্তরের জনগণ, এমনকি যারা পিছনে থেকে কলকাঠি নেড়েছিল তারাও পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল কেবল চিন্তায় অসাধু ভাবনা ও ষড়যন্ত্র থাকার কারণে।

যাই হোক হিসেবে রাত পোহালে যেহেতু নির্বাচন সেহেতু সকল পক্ষই নির্বাচনে ইমোশন কাজে লাগিয়ে ফায়দা নিতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। জিততে পারা না পারা পরের বিষয়। সেটা ভিন্ন আলোচনা।

দেশটা কারো বাপের না। স্ক্রিপ্ট লেখক ও এক্টর এক্টরেসদের প্রতি জিজ্ঞাসা তোমরা তরুণ তরুণী বললে দেশটা কারো বাপের না, আমিও এগ্রি করি দেশটা কারো বাপের না, বাপের হতে পারে না। তবে তোমাদের প্রশ্ন প্রসঙ্গে আমার জিজ্ঞাসা, দেশটা কি তোমাদের বাপের?

ভুলে যেও না ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য তোমাদের পক্ষের বিএনপি জামাতিরা ১৫ জন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছিল। একই কারণেই ২০১৩ সালে সন্ত্রাসতন্ত্রের নামে রাজনৈতিক সহিংসতার ৪১৯ টি প্রধান ঘটনায় ৪৯২ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে এবং ২২০০ জন মানুষ কে আহত করে। তখন কি দেশটা তোমাদের বাপের ছিল ?

মনে আছে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বিরোধিতা করে তোমাদের বিএনপি জামাতি ভাইয়েরা সন্ত্রাসের রাজত্ব শুরু করে সেসময় শত শত যানবাহন ভাংচুর করে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই ঘটনায় তোমরা পেট্রোল বোমা, হাতে বানানো বোমা এবং অন্যান্য সহিংসতায় ২০জন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ২০০ জনেরও বেশি মানুষ হত্যা করেছিলে। এছাড়াও রাস্তার পাশে থাকা হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলেছিলে, পাড়া মহল্লায় ছোট দোকান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতেও আগুন দিয়েছিলে, বাদ যায়নি মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জা করেছো ভাঙচুর, আগুন দিয়ে পবিত্র কুরআনের শত শত কপি জ্বালিয়ে দিয়েছিলে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের দিনে, একজন প্রিসাইডিং অফিসার, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ মোট ২৬ জনকে হত্যা করে এবং সারাদেশে ৫৮২টি স্কুলে ভোটকেন্দ্রে আগুন লাগিয়েছিলে। জিজ্ঞেস করি, তখন কি দেশটা তোমাদের বাপের ছিল ?

২০১৫ সালে, ৪ জানুয়ারি নির্বাচনের এক বছর পূর্তির দিন আবারও জ্বালাও-পোড়াও শুরু করে পেট্রোল বোমার আগুনে ২৩১ জনকে হত্যা করেছিলে। ঐ সময় তোমাদের পেট্রোল বোমার আগুনে আহত হয় আরো ১ হাজার ১শ’ ৮০ জন। সেসময় তোমরা ২,৯০৩টি গাড়ি, ১৮টি রেলগাড়ি এবং ৮টি যাত্রীবাহী জাহাজে আগুন লাগিয়েছিলে। পাশাপাশি ওই সময় তোমাদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল সরকারি অনেক অফিস। মনে পড়ে, তোমাদের দেওয়া আগুনে পুড়ে ৬টি ভূমি অফিসসহ ৭০টি সরকারি কার্যালয় নষ্ট হয়। জিজ্ঞেস করি, দেশটা কি তোমাদের বাপের ছিল ?

আজকে মনে হলো তোমরা এই দেশের তারণ্য, এই দেশ কারো বাপের না… বুঝতে পারো ? বুঝেছিলে ? বুঝার চেষ্টা করেছো ?

ফাইল ফটো

দেশটা তো কারো বাপের না। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির হিসেব মতে, তোমাদের সহিংস হরতাল-অবরোধের প্রতিটি দিন এই দেশের ১৬০০ কোটি টাকা (অথবা ১৯২.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বা জিডিপি’র ০.২ শতাংশ ক্ষতি হয়েছিল। অর্থাৎ ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে তোমাদের সহিংসতা হরতাল অবরোধের কারণে শুধু রাষ্ট্রের অর্থনীতির ১.৫৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ ক্ষয় হয়। তখন কি দেশটা তোমাদের বাপের ছিল ?

উল্লেখ্য পাবলিক প্রোপার্টি বা অন্যান্য যা কিছু ধ্বংস করেছিলে সেইসবের হিসেব অন্তর্ভুক্ত নয়। শুধু উত্তর দাও, দেশটা কি তোমাদের বাপের ছিল?

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)