প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে স্মার্টফোন, ট্যাব কিংবা ল্যাপটপ এখন আমাদের সার্বক্ষণিক সঙ্গী। দিনের প্রায় প্রতিটি ক্ষণেই কোনো না কোনো কারণে এসব ডিভাইস আমাদের ব্যবহার করতে হয়। তবে এসব ইলেক্ট্রনিকস ডিভাইস দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। মানসিক শান্তি নষ্ট করার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে কাছের মানুষদের সাথে সম্পর্ক খারাপ করার খেত্রেও প্রভাব বিস্তার করে এসব ডিভাইসের দীর্ঘ ব্যবহার।
প্রয়োজন থাকায় এসব ডিভাইসের ব্যবহার একেবারে বন্ধ করে দেওয়ারও কোনো উপায় নেই। তবে আসক্তি থেকে বেরিয়ে এসে কেবলমাত্র প্রয়োজনের সময়টুকুতেই কেবল স্মার্টফোন, ল্যাপটপ কিংবা ট্যাব ব্যবহার করা যেতে পারে।
স্মার্টফোন আসক্তি দূর করার অনেক উপায় রয়েছে। তিন সপ্তাহে স্মার্টফোন আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসার এমনই একটি উপায় জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টাইম।
প্রথম সপ্তাহ
প্রযুক্তির ব্যবহার থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন। যদিও আমাদের অগোচরেই দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির প্রবেশ ঘটে থাকে। টেক-ফ্রি জোন তৈরি করুন। গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকতে এটি আপনাকে সাহায্য করবে।
ঘুম থেকে উঠার পর ৩০ মিনিট ফোন ব্যবহার করবেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনার দিনের শুরুটা যদি প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়াই শুরু হয়, তাহলে দিনের অন্য সময়েও আপনি সকল কাজে মনোযোগ দিতে পারবেন আগের থেকে বেশি।
খাওয়ার সময়টাতে কোনো প্রযুক্তি পণ্য ব্যবহার করবেন না। এর ফলে খেতে পারবেন আরও মনোযোগ দিয়ে।
প্রযুক্তির ব্যবহারে নিজেই নিজের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে লাগাম টেনে ধরুন। রাতে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিজেই নিজেকে বাধা দিন।
দ্বিতীয় সপ্তাহ
ফোনের সাথে বন্ধন ছিন্ন করুন। চেষ্টা করুন নিজেকে ফোন থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে। তবে কাজের কোনো ফোনকল, ইমেইল বা এসএমএস হলে সেটি ভিন্ন কথা।
ফোনের সকল পুশ নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন। পুশ নোটিফিকেশন চালু থাকলে বিভিন্ন অ্যাপের আপডেট বা অন্যান্য তথ্য, ফেসবুকের বিভিন্ন নোটিফিকেশন সামনে চলে আসে। সব ধরনের নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখলে ফোন আপনাকে আগের মতো আর যখন তখন কাছে টানবে না।
কোথাও গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময়টাতে ফেসবুক চালাচ্ছেন? কী দরকার। অন্তত এ সময়টাতে এসব থেকে দূরে থাকুন।
নিজের জন্য সময় বের করুন। এ সময়টাতে বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্য এমনকি টিভি দেখা থেকেও বিরত থাকুন। এ সময়ে কোনো বই পড়ুন, খেলাধুলা করুন কিংবা হাঁটতে যেতে পারেন।
তৃতীয় সপ্তাহ
প্রযুক্তি পণ্যের ব্যবহার একেবারেই বন্ধ করলে চলবে না। তবে ব্যবহার করতে হবে একেবারেই প্রয়োজন বুঝে।
একেবারে সময় ধরে বিভিন্ন গ্যাজেট ব্যবহার করুন। একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর হাল্কা বিরতি নিন। এ সময়ে কিছুক্ষণ হাঁটতে পারেন।
প্রযুক্তি পণ্য ব্যবহারে নজরদারির জন্য অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। যেমন- AppDetox নামে একটি অ্যাপ আছে যা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কেবল একটি নির্দিষ্ট সংখ্যকবার একটি অ্যাপ ব্যবহার করতে দেবে।