চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

দুর্ঘটনায় এতো মৃত্যু!

চলতি বছরের জুন মাসে ৩ হাজার ১১০ সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৪৭ জন নিহত ও ২ হাজার ৬২২ জন্য আহত হয়েছেন। জাতীয় মহাসড়ক, আন্তঃজেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে এসব প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (১ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘সেভ দ্য রোড’।

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের সড়ক, নৌ, রেলপথে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়ে যাবে। পদ্মা সেতু হবার কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাবে, আর বর্ষাকাল হওয়ার কারণে নৌপথ থাকবে উত্তাল। এসবের পাশাপাশি বিগত মাসের দুর্ঘটনা তথ্য শঙ্কার জন্ম দিচ্ছে ঈদযাত্রায়।

‘সেভ দ্য রোড’ এর প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছর জুন মাসে ৮৫৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৭৫২ জন আহত এবং ২৭৬ জন নিহত হয়েছেন। ট্রাক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬১৮টি। এর মধ্যে আহত ৪৫৬ ও নিহত ১৫৬ জন। ৯৩৮টি বাস দুর্ঘটনায় আহত ৭৫১ ও নিহত ৪২০ জন। এ ছাড়া পাড়া-মহল্লায়, মহাসড়কে অসাবধানতার কারণে লরি, পিকআপভ্যান, নসিমন, করিমন, ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত ও রিকশা-সাইকেলে ৬৯৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ১৯৫ ও আহত হয়েছেন ৬৬৩ জন।

এছাড়া জুন মাসে নৌপথে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১২২টি। এতে আহত ৪৭৭ জন ও নিহত ২৪ জন। রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৯৭টি। এতে আহত ১৭২ জন ও নিহত ১৭ জন। তবে আকাশপথে দুর্ঘটনা না হলেও বিমানবন্দরে অব্যবস্থাপনার কারণে বিভিন্ন সময় ৭৩ জন চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানানো হয়।

উপরের তথ্যগুলো দেখলে বোঝা যাচ্ছে, মোটরসাইকেল যাত্রাপথে প্রাণহানির অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে সাম্প্রতিক সময়ে। তাছাড়া ওই প্রতিবদনে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে দ্রুত গতিতে চালানো, ট্রাফিক নিয়ম না মানা, হেলমেট ব্যবহারে অনিহা দুর্ঘটনার কারণ। অপর দিকে, অসাবধানতাু ও ঘুমন্ত চোখে ক্লান্তিসহ দ্রুত চালানোর কারণে ট্রাক দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাসে যেসব দুর্ঘটনা ঘটেছে এর পেছনে কারণ রাস্তার খানাখন্দ, অচল রাস্তাঘাট ও সড়ক পথে নৈরাজ্য।

ঈদযাত্রায় লাখ লাখ মানুষ রাজধানী ছেড়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় আসা যাওয়া করে থাকে। রাজধানী ছাড়াও পুরো দেশে সড়কসহ নানা অবকাঠামোর কাজ চলমান থাকায় স্বাভাবিকভাবেই যানজট থাকে, তাছাড়া বিভিন্ন সেতুর টোল প্লাজায় অতিরিক্ত গাড়ির চাপের রেশ পড়ে মাইলের পরে মাইল। তবে আশার কথা হচ্ছে, গত ঈতুল ফিতরের আগে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসগকের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ শেষ করে তা যাতায়াতের জন্য চালু করায় উত্তরবঙ্গের পথে জ্যাম কম ছিল। আর এবছর স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে জেলার যোগাযোগ অনেক সহজ হবে। নৌপথের চাপও কমে আসবে অনেকাংশে।

এতোকিছুর পরেও প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছেই যায়। ট্রাফিক পুলিশসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর নানা চেষ্টার পাশাপাশি জনগণকে সচেতন হতে হবে। ঈদযাত্রাসহ স্বাভাবিক সময়ে সড়ক-মহাসড়কে কোনো দুর্ঘটনা যেনো কোনো পরিবারের কান্নার কারণ না হয়, সেজন্য আমাদের সচেতন হতে হবে।