বর্তমানে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাটা দিন দিন বাড়ছে। অনেকেই মনে করেন যে, বয়সের সঙ্গে বোধহয় হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক অল্প বয়সী মানুষও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতুবরণ করছেন।
ধমনীতে বাধার কারণে যখন হৃদযন্ত্রে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়, মূলত তখনই হৃদযন্ত্রের এই সমস্যাগুলি দেখা দেয়। কেউ যদি উচ্চ কোলেস্টেরল বা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হন, তাহলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়।
ডায়াবেটিস শনাক্তকরণের জন্য যেমন রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে, তেমনি একজন ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন কিনা তার পূর্বাভাসও পাওয়া যায় বহু আগে থেকেই রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে।
যে দুটি পরীক্ষার মাধ্যমে বছরখানেক আগেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আছে কিনা জানা যাবে তা হল:
সিআরপি (সি-রিঅ্যাকশন প্রোটিন) পরীক্ষা: লন্ডনের ‘ন্যাশনাল হার্ট অ্যান্ড লাং ইনস্টিটিউট’-এর বিশেষজ্ঞরা এই পদ্ধতিটি আবিষ্কার করেছেন। ‘সিআরপি’ এক ধরনের প্রোটিন। হার্ট অ্যাটাকের পর রক্তে যার অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
মূলত রক্তে এই প্রোটিন বৃদ্ধি পেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই এই ‘সিআরপি’ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রায় বছর তিনেক আগে থেকে জেনে নেয়া সম্ভব যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না। থাকলেও তা কতটা।
‘সিআরপি’-এর মাত্রা সাধারণত ২ মিলিগ্রাম বা তার নীচে থাকা স্বাভাবিক। তবে এর মাত্রা যদি ১০-১৫ মিলিগ্রাম থাকে, তাহলে হৃদযন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
‘সিআরপি’ ছাড়াও আরও একটি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রায় বছর খানেক আগে থেকে বুঝতে পারা যায় পরবর্তীতে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে কি না।
শরীরের প্রায় অনেক রোগের পূর্ব লক্ষণ দেখা দেয় চোখে। হৃদরোগের ক্ষেত্রেও এর অন্যথা হয়নি। চোখে রেটিনার চরিত্র, আচার-আচরণ দেখে অনেক আগেই হার্ট অ্যাটাকের পূর্বাভাস পাওয়া যায়। এই অভিনব পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে গুগলের আট সদস্যের একটি গবেষক দল।
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের উচ্চ মাত্রা বোঝার প্রাথমিক উপায় হিসাবে চিকিৎসকরা বহু দিন ধরেই রেটিনা পরীক্ষা করে আসছেন। রেটিনার ধমনীতে একটুও বদল চোখে পড়লে তা হার্ট অ্যাটাকের পূর্বাভাস হতে পারে। এ ছাড়াও কয়েক ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রেও প্রাথমিকভাবে রেটিনা পরীক্ষার ব্যবহার রয়েছে।