চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

দুই সুখবরে স্বস্তি ফিরুক

একই দিনে বাংলাদেশের জন্য দুটি সুখবর এলো। যার একটি মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়ার খবর। আরেকটি গত মাসে (এপ্রিল) রপ্তানি আয় প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধির। মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) তাদের সাময়িক এক হিসাবে জানিয়েছে, চলতি (২০২১-২২) অর্থ বছরের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার। যা আগের বছরের তুলনায় ২৩৪ ডলার বেশি।

আরেকটি হিসাব দিয়ে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানিয়েছে, ব্যাপকভাবে পোশাক রপ্তানি হওয়ায় এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৫১ দশমিক ১৮ শতাংশ বেড়ে ৪৭৩ কোটি ৪৬ লাখ মার্কিন ডলার হয়েছে। আগের অর্থ বছরে (২০২০-২১) এই মাসে যার পরিমাণ ছিল ৩১৩ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। এই সময়ের ব্যবধানে ৪০ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি রপ্তানি হয়েছে।

আমরা জানি, করোনা মহামারীর মধ্যেও গত অর্থবছর মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৫৯১ ডলার। আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান আরেকটি তথ্য জানান। সেটা হলো চলতি অর্থবছর শেষে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। আগের বছর যা ছিল ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

কিন্তু এসব অগ্রগতিতে সাধারণ মানুষের কতটা লাভ? কত ক্ষতি? স্বাভাবিকভাবে বলা যায়, সূক্ষ্ম হিসাব-নিকাশের এসব পরিসংখ্যান দিয়ে দেশের অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির একটা চিত্র পাওয়া যায়। ধারণা করা যায়, আগামীতে অর্থনীতি ঠিক কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু তাতে আমজনতার কি যায়, আসে? এই যে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ ডলার, এটা কি সবার জন্য প্রযোজ্য? বাস্তবে কিন্তু তা নয়। বহু মানুষের আয় নেই ১ পয়সাও। আবার অনেকের আয় ২ হাজার ৮২৫ ডলারেরও বহুগুণ বেশি।

মূলত একটি দেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক আয় যোগ করে মোট জাতীয় আয়ের হিসাব পাওয়া যায়। সেটাকে আবার মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে মাথাপিছু আয় বের করা হয়। অর্থনীতিতে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ সূচক হলেও সাধারণ মানুষের পকেটে খুব একটা প্রভাব রাখে না। তবে সার্বিকভাবে জাতীয় আয় বাড়লে তা শেষ পর্যন্ত জনগণের কল্যাণেই কাজে লাগে। সে জন্য সুশাসনের পাশাপাশি সঠিক পরিকল্পনাও জরুরি।

করোনা মহামারীর পাশাপাশি বৈশ্বিক অস্থিরতা এবং কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে বাংলাদেশের নিত্যপণ্যের বাজার অনেকদিন ধরেই অস্থির। ভোজ্যতেলসহ আরও কিছু পণ্য এখন বহু মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। তারা যে কষ্টে আছেন, সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই।

আমরা মনে করি, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন মানেই সার্বিকভাবে দেশের মানুষেরই উন্নয়ন। কিন্তু সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে অনেক সময় তার সুফল সবার কাছে পৌঁছে না। এসব বিষয় বিবেচনায় এনে সরকারকে সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তাবেই আসবে প্রকৃত উন্নয়ন।