ক্যান্সারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পারভিন সুলতানা দিতি। গত বছর থেকেই ব্রেন টিউমার এবং তা থেকে জন্ম নেওয়া ক্যান্সার নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ করেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন।
দীর্ঘ এ যুদ্ধে তার সঙ্গে সারাক্ষণ সঙ্গ দিয়েছেন দুই সন্তান লামিয়া আর দীপ্ত। মায়ের সঙ্গে নিজেরা মনের দিক থেকে শক্ত ছিলেন। পাশে পাশে থেকে সবসময় শক্তি দিয়ে গেছেন দিতিকে।
অসুখের সঙ্গে এ লড়াইটা শুরু গত বছর জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে। হঠাৎ করেই ধরা পড়ে দিতি ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপরই উন্নত চিকিৎসকার জন্য ভারতের চেন্নাইয়ের এমআইওটি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। প্রথম দফায় অস্ত্রোপচার সফলও হয়। সেসময় চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তিনি আশংকামুক্ত। তার মস্তিষ্কের কোনো ক্ষতি হয়নি।
কিন্তু রোজার ঈদের কয়েকদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ পড়েন। দ্রুত তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ২৫ জুলাই আবাবো ভারতের চেন্নাইয়ের এমআইওটি হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। তখনও মায়ের পাশে সার্বক্ষণিকভাবে পাশে ছিলেন তার মেয়ে লামিয়া, কানাডা প্রবাসী ছেলে দীপ্ত ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহিম গুলজার।
তৃতীয় বারের মত মস্তিষ্কে অপারেশন করার পর চিত্রনায়িকা পারভিন সুলতানা দিতির শারীরিক অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হতে থাকে। আইসিইউতে নেওয়া হয় তাকে।
ফেসবুকে লামিয়া জানান, তৃতীয় বারের মতো তার শরীরের সার্জারী করা দরকার। কিন্তু ডাক্তাররা বলেছেন, তার জন্য কিছু সময় নিতে হবে। মারাত্মক অবস্থা থেকে তাকে ফিরে আনতে আমরা সবাই চেষ্টা করছি।
অবস্থার কোনোপ্রকার উন্নতি না হওয়ার পরিবারের নপক্ষ থেকে তাকে বাংলাদেশের ফেরত আনা হয়। এরপর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সম্পূর্ণ নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। বহুবার কেমোথেপির পর ভীষণ কষ্টে সেইসময় পার করেছিলেন বহু ছবিতে অভিনয় করা দিতি।
মায়ের এমন কষ্ট সহ্য না করতে পেরে মেয়ে লামিয়া চৌধুরী সবাইকে বলেছিলেন ‘দয়া করে তার দ্রুত ও সহজ মৃত্যুর প্রার্থনা করুন, অবশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিকবার দিতির মৃত্যুর গুজব ছড়ায়। সেই খবরে লামিয়া ভীষণ ক্ষিপ্তও হয়েছিলেন।